প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল কর্মীকে বোমা মেরে খুনের ঘটনায় দলেরই তিন কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হলেন জহিরুল ওরফে ছোটু শেখ, মেহেরুল শেখ এবং লাল শেখ। তিন জনেরই বাড়ি রামপুরহাটের দখলবাটি গ্রামে। ধৃতদের রবিবার রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়চৌধুরী ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
শনিবার সকালে রামপুরহাট থেকে মোটরবাইকে একা বাড়ি ফিরছিলেন দখলবাটি গ্রামের তৃণমূল কর্মী মোসারফ হোসেন ওরফে বাবুল (৫৭)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, রামপুরহাট দুনিগ্রাম সড়কে জয়কৃষ্ণপুর গ্রাম সংলগ্ন মাঠপাড়া এলাকার কালর্ভাটের কাছে তিন দুষ্কৃতী মোসারফের বাইক আটকায়। মোটরবাইক লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার পরে মোসারফ রাস্তায় পড়ে গেলে ফের মাথায় বোমার আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
এ দিকে ঘটনার পরেই গ্রামের আর এক তৃণমূল কর্মী কামারুল ওরফে কামা শেখের নেতৃত্বে গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। মোসারফের বাড়ির কাছেও বোমাবাজি হওয়ায় শুরুতে পরিজনেরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি। পরিজনদের অভিযোগ, ‘‘মোসারফকে খুনের পরে খুশিতে কামা শেখ সহ কিছু দুষ্কৃতী ওই বোমাবাজি করে। বাড়ির মহিলাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।’’
শনিবার রাতেই মোসারফের স্ত্রী মানোয়ারা বিবি কামা শেখ সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতে দখলবাটি গ্রাম থেকে কামা শেখের অনুগামী বলে পরিচিত তিন জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, ধৃত লাল শেখের বাড়ি থেকে চারটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। কামা সহ বাকি অভিযুক্তরা পলাতক বলেও পুলিশের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল পরিচালিত দখলবাটি পঞ্চায়েতের দু’বারের প্রাক্তন প্রধান হানিফ খানের বড় ছেলে মোসারফ। হানিফ কংগ্রেস করতেন। পরে হানিফ সহ গ্রামের অনেকে দলবদল করে তৃণমূলে চলে যান। পরিজনদের দাবি, মোসারফ পঞ্চায়েতে ঠিকাদারের কাজ করতেন। আর
কামা শেখেরা নানা অসামাজিক কাজ করত। মানোয়ারা বিবির কথায়, ‘‘এক বছর ধরে কামার দলবল মোসারফ সহ আমাদের পরিবারের লোকজনদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত। সে জন্য গ্রামের বাইরেও খুব কম বেরোতেন স্বামী। বেরোলেও অন্য পথ দিয়ে গ্রামে যাতায়াত করতেন। তবু ওরা ওঁকে ছাড়ল না।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইদের দিন গ্রামে জোরে মোটরবাইক চালানোকে কেন্দ্র করে মোসারফের সঙ্গে কামার দলবলের গোলমাল হয়। দুর্গাপুজোর সময় বিসর্জনকে কেন্দ্র করে বিরোধ বাঁধলে গ্রামে পাঁচ, ছ’দিন পুলিশ
মোতায়েন ছিল। শুক্রবার রাতে গ্রামে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও যোগ দিয়েছিল কামা এবং মোসারফ। সেখানে তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন, রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত
সমিতির সভাপতি শুভাশিস কর্মকার, সহ সভাপতি পান্থ দাসেরা উপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক কারণে বিজেপিই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের জবাব, “এই জেলায় যে কোনও
ঘটনাতেই তৃণমূল দলের কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। দখলবাটিতে যা হয়েছে সেটাও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy