খাতরার শ্মশানকালী। নিজস্ব চিত্র।
শ্মশানের মধ্যে ঘন জঙ্গলে ঘেরা ছোট পর্ণকুটিরে পুজো করা হত কালীর। তবে সেই পর্ণকুটিরটি আজ উধাও। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তার বদলে গড়া হয়েছে দামি মার্বেল পাথরের ঝাঁ-চকচকে বিশালাকার কালী মন্দির। তবে বাঁকুড়ার খাতড়ায় সবচেয়ে প্রাচীন শ্মশানকালী মন্দিরের মাহাত্ম্য কমেনি। শ্মশানকালীর টানে আজও ছুটে আসেন ভক্তেরা।
অনেকের মতে, ভক্তিভরে প্রার্থনা করলে ফিরিয়ে দেন না এ মন্দিরের দেবী। খাতড়া শহরের বধূ চিন্ময়ী দত্ত বলেন, “শ্মশানকালী মন্দিরের মা কালী অত্যন্ত জাগ্রত। মন থেকে প্রার্থনা করলে দেবী মনোবাসনা পূর্ণ করেন। শান্ত, নিরিবিলি মন্দির চত্বরে ঢুকলেই শান্তির অনুভূতি হয়। আর সে অনুভূতির টানেই দিনে অন্তত এক বার হলেও এখানে ছুটে আসি।”
সরকারি ভাবে পুরসভার তকমা মেলেনি। তবে বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের মহকুমা শহর খাতড়ার কলেবর ক্রমশ বাড়ছে। তাল মিলিয়ে বেড়েছে কালীপুজোর সংখ্যাও। তবে শ্মশানকালী মন্দিরের পুজোর সঙ্গে নাকি টেক্কা দিতে পারেনি শহরের বারোয়ারি পুজোগুলি। ফি বছর কালীপুজোর দিনে এখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের ভিড় হয় বলে মন্দির পরিচালকদের দাবি। পুজোর পরের দিন চলে নরনারায়ণ সেবা। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ তাতে যোগ দেন বলেও দাবি।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, নিম্নবর্গের হাতে খাতড়ার শ্মশানে কালীপুজো শুরু হয়েছিল। কথিত, জনৈক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক তাঁর নিকট আত্মীয়ের দেহ সৎকারে এ শ্মশানে এলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির থেকে বাঁচার জন্য শ্মশানের কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই পাননি তিনি। পরবর্তীকালে মূলত তাঁর উদ্যোগেই শ্মশানকালী মন্দিরের সংস্কার শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাঁকুড়ার কোড়ো পাহাড়ের উপরের পার্বতী মন্দিরের আদলে এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। শহরের বাসিন্দাদের উদ্যোগে প্রায় ৩৫ বিঘা জমির উপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে রামকৃষ্ণ, সারদা এবং বিবেকানন্দ মন্দির। গড়া হয় শিবমন্দির, রন্ধনশালা-সহ প্রসাদ গ্রহণের জন্য বিশাল হলঘর। মন্দিরের অন্যতম কর্মকর্তা অভিজিৎ মহাপাত্র বলেন, “কালীপুজোর রাতে ও তার পরের দিন গোটা খাতড়া মহকুমা থেকে হাজার হাজার মানুষ এই মন্দিরে আসেন। শীতকালে যাঁরা মুকুটমণিপুর বেড়াতে আসেন, তাঁরাও এ মন্দির ঘুরে যান। দক্ষিণ বাঁকুড়ার অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে এ মন্দির। ভবিষ্যতে মন্দির চত্বরে দ্বাদশ শিবলিঙ্গ স্থাপন-সহ একটি অতিথিনিবাস তৈরির পরিকল্পনা করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy