পথে নামবে না। তবে সাজানো হচ্ছে বাঁকুড়ার বড়রথ। নিজস্ব চিত্র
শতবর্ষ প্রাচীন মণি বাইজির রথের চাকা এ বার গড়াচ্ছে না পুরুলিয়া শহরের রাজপথে। করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রথযাত্রার অছি পরিষদ। ১০৯ বছর আগে মণি বাইজি নামে এক নর্তকী রথ ঘিরে উৎসবের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ভিড় এড়ানোর জন্য জেলার বেশ কয়েকটি রথযাত্রা কমিটিকে রথ বার করতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে এ বার পথে নামবে না ইতিহাস প্রসিদ্ধ মণি বাইজির রথ, পঞ্চকোটরাজের শেষ রাজধানী কাশীপুরের ষোলোআনা কমিটির রথ, হুড়ার ‘ইসকন’-এর রথ।
পুরুলিয়ার ইতিহাস গবেষক দিলীপকুমার গোস্বামী জানান, পঞ্চকোট রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ রাজেন্দ্রনারায়ণ সিংহদেও সঙ্গীত বিশারদ ছিলেন। তবলা ও পাখোয়াজ ভাল বাজাতেন। সে সময় বাংলার কোকিল নামে পরিচিত ছিলেন কমলা ঝরিয়া নামে এক গায়িকা। তাঁকে পুরুলিয়ায় এনেছিলেন পুরুলিয়া মৌজার জমিদার রাজেন্দ্রনারায়ণ। তখনই রাজেন্দ্রনারায়ণের সঙ্গে মণি বাইজির যোগাযোগ হয়। মণি বাইজি থাকতেন চকবাজার সংলগ্ন (বর্তমানে শহরের কাপড়গলি নামে পরিচিত) বাজার এলাকায়। বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা গ্রহণের পরে, পুরুলিয়া শহরে রথযাত্রারও প্রচলন করেন তিনি। রথে অধিষ্ঠিত হন রাধাগোবিন্দ।
পছন্দ: পথে না নামলেও ঘরের ভিতরে ছুটবে রথ। সোমবার বিষ্ণুপুরের বাহাদুরগঞ্জে খুদের বাছাই। ছবি: শুভ্র মিত্র
রথযাত্রার সঙ্গে পাঁচ দশক ধরে যুক্ত চকবাজারের বাসিন্দা শচীদুলাল দত্ত। তাঁর কথায়, “প্রশাসনের তরফে পথে রথ না নামানোর কথা বলা হয়েছিল। আমরা সে নির্দেশ মেনে নিয়েছি।” সঙ্গে যোগ করেন, “আগে রথযাত্রা বন্ধ হয়েছিল, এমন কথা বাপ-ঠাকুরদার মুখে কখনও শুনিনি। এ বার তারও সাক্ষী থাকলাম।” যদিও তিনি জানান, রাস্তায় রথ না নামলেও মন্দিরের মধ্যেই রথে রাধাগোবিন্দজিউ অধিষ্ঠিত হবেন এ বার।
তিন বছর আগে ‘ইসকন’-এর রথযাত্রা শুরু হয় হুড়াতে। রথযাত্রাই হুড়ার সবচেয়ে বড় উৎসব। রথযাত্রা কমিটির সভাপতি নৃপেন কর বলেন, “বিদেশি অতিথিরা এখানে আসেন। আসেন ইসকনের প্রভুরাও। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতির কারণে এ বার প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। সকলেরই মন খারাপ।”
রথের চাকা গড়াবে না পঞ্চকোটরাজের শেষ রাজধানী কাশীপুরেও। কাশীপুর ষোলোআনা রথ কমিটির সভাপতি মনোজ চেল বলেন, “কাশীপুরে পঞ্চকোটের রাজধানী প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৮৩২ সালে। তবে রথযাত্রা কবে শুরু হয়েছিল, তার প্রামাণ্য নথি মেলেনি।”
ঝালদা এবং বলরামপুর ও রঘুনাথপুরেো এ বার রথের দড়িতে টান পড়বে না। তিন রথযাত্রা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, করোনা-পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy