Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

তৃণমূলের ব্যানারে নেই অনুব্রত

বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় তৈরি হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের তৈরি দুটি শহিদ বেদি। গ্রামবাসীদের একাংশ অবশ্য একান্তে ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, ‘‘সারা বছর কোনও রাজনৈতিক দল খোঁজ নেয় না।”

শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহের।

শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহের। নিজস্ব চিত্র।

তন্ময় দত্ত 
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৮:০৮
Share: Save:

গোটা গ্রাম ছেয়ে গেছে তৃণমূল আর বিজেপির পতাকা ও ফ্লেক্সে। এক দিনেক মমতা-অভিষেকের ছবি, অন্য দিকে মোদীর। কিন্তু, এ সবের মাঝে কোথাও নেই জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল! তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্তে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি রাখা হয়নি। জেলা সভাপতি কর্মীদের মনে রয়েছেন। ছবির কী দরকার?’’

বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় তৈরি হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের তৈরি দুটি শহিদ বেদি। গ্রামবাসীদের একাংশ অবশ্য একান্তে ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, ‘‘সারা বছর কোনও রাজনৈতিক দল খোঁজ নেয় না। এখন প্রচারের জন্য ও রাজনীতির জন্য সব দলের নেতারা আসছেন।’’ এক বছর আগের সেই রাতের ঘটনা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে অনেকের। গ্রামের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। পুলিশ পাহারা রয়েছে গ্রামে। তবুও অনেকেই জানান, সন্ধ্যের পরে কাজ না থাকলে কেউ বাড়ি থেকে বের হন না।

আতঙ্ক কাটেনি মৃত মিনা বিবির মেয়ে মফিজা বিবিরও। কাঁদতে কাঁদতে মফিজা এ দিন বললেন, ‘‘মা মৃত্যুর আগে আমার ছেলে ও মেয়েকে পালিয়ে যেতে বলেছিল। ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। সেই রাতের ঘটনায় এখনও তারা আতঙ্কিত।’’ মফিজার কথায়, ‘‘তাদের কাছে শুনেছি দল বেঁধে দুষ্কৃতীরা মায়ের উপর কুড়ুল দিয়ে আক্রমণ করে। পাশের ঘরে আমার ছেলেমেয়েরা ছিল। মা মরে যাওয়ার ভান করে পড়ে ছিল। তখন দুষ্কৃতীরা পাশের বাড়িতে চলে যায়। সেই সুযোগে নাতি ও নাতনিকে মাঠের মধ্যে পালিয়ে যেতে বলে।’’ মফিজা জানান, তাঁর ছেলেমেয়েরা সারারাত মাঠের মধ্যে ধানের খেতে লুকিয়ে ছিল। তাদের খুঁজতে আবার দুষ্কৃতীরা এসেছিল বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেমেয়েদের না পেয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’’

এ দিন সকালে তৃণমূলের শোকসভা, বিকেলে বিজেপি ও তারপরে সিপিএম-এর মৌনী মিছিল। দিনভর কর্মসূচি ছিল গ্রামে। গ্রামের অনেককে দেখা গেল কেউ জানলা দিয়ে, কেউ বাড়ির ছাদ থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেখছেন। সকলের চোখে মুখে আতঙ্কের ছবি ছিল স্পষ্ট। গ্রামের এক বাসিন্দা সাব্বির শেখ বলেন, ‘‘গ্রামে রাজনৈতিক উত্তাপ ছিল। এক বছর হয়ে গেলেও আতঙ্ক কাটছে না। সে দিনের মানুষজনের আর্তনাদ এখনও কানে ভেসে ওঠে। এখন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে গ্রাম।’’

এ দিন বিকেলে শুভেন্দু অধিকারী বগটুই মোড়ে ঢোকার আগে বিজেপির বাস ঢোকা নিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাও পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও দেখা যায়। মিনিট দশেক পরে পরিস্থিতি স্বভাবিক হয়ে গেলে সকলেই বগটুই রওনা দেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy