Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Prashant Kishor

প্রশ্নমালা নিয়ে দুয়ারে হাজির পিকে-র দল

সিউড়ি হোক বা দুবরাজপুর— এ সব তথ্য জানতে চেয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে হঠাৎ এমনই ফোন আসছে।

প্রশান্ত কিশোর।—ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত কিশোর।—ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১৮
Share: Save:

আপনার ওয়ার্ডে সমস্যা কী কী? রাস্তাঘাট, পানীয় জল, আলো, নিকাশি-সহ পুর পরিষেবা কেমন? কাউন্সিলর যোগাযোগ রাখেন? পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে যদি কাউন্সিলরকে নম্বর দিতে বলা হয় একশোয় কত দেবেন?

সিউড়ি হোক বা দুবরাজপুর— এ সব তথ্য জানতে চেয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে হঠাৎ এমনই ফোন আসছে। ফোনের ওপার থেকে বাসিন্দাদের তাঁরা জানিয়েও দিচ্ছেন যে ফোন করা হচ্ছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) দলের তরফ থেকে। শুধু ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই নন, পিকে-র দলের সদস্যদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে পুরপ্রধান থেকে কাউন্সিলর সকলকেই।

তৃণমূল সূত্রে খবর, পুর এলাকায় শাসকদলের হালহকিকত খতিয়ে দেখতে আসরে নেমে গিয়েছে পিকে-র দল। সেই দলে উচ্চশিক্ষিত তরুণরা-তরুণীরা রয়েছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছেন তাঁরা। বিবেচনার মাপকাঠি গত পাঁচ বছরের কাজ। এই সময়ে জেলার যে পাঁচটি পুরসভায় ভোট সেই পুরসভাগুলির ওয়ার্ডে দলের কাউন্সিলর ও দলের কাজের মূল্যায়ন করছেন তাঁরা। তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা, আসন্ন পুরভোটে দলের টিকিট পাওয়ার মাপকাঠি হতে পারে পিকের দলের এই সমীক্ষাই।

সিউড়ির এক কাউন্সিলর বলছেন, ‘‘আমার কাছে পিকে-র দলের কোনও ফোন আসেনি। তবে ওয়ার্ডের অন্তত ৭-৮ জন আমাকে জানিয়েছেন তাঁরা পিকে-র দলের ফোন পেয়েছেন। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পুর-পরিষেবা সম্পর্কে খুঁটিনাটি প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁদের।’’ একই কথা বলছেন মেয়াদ ফুরনো দুবরাজপুরের এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওয়ার্ডের লোকজন তো ফোন পেয়েছেনই। আমার বাড়িতেও এসেছিল পিকের দল। আমি কী ভাবে ওয়ার্ডে কাজ করেছি তা আমার থেকে বোঝহয় ওঁরাই ভাল জেনে এসেছেন। পুরো ওয়ার্ডের ইতিবৃত্ত ওঁদের নখদর্পণে।’ তিনি জানান, শুধু পুর-পরিষেবা নয়, তাঁর পরিবারের বা আত্মীয় কেউ পুরসভায় ঠিকাদারি করে কি না তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।

তৃণমূল সূত্রে খবর, সব ওয়ার্ডের বাসিন্দা বা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সঙ্গে অবশ্য এখনও যোগযোগ এখনও করেনি পিকের দল। তবে মাসকয়েক আগে গঠিত ওয়ার্ড কমিটির কাছে ও বুথ কমিটির সদস্যদের কাছে ফোন এসেছে। জেলার দুবরাজপুর সিউড়ি, সাঁইথিয়া বোলপুর ও রামপুরহাট— যে পাঁচটি পুরসভায় এ বার নির্বাচন হওয়ার কথা সেগুলিতে ১০ জনের ওয়ার্ড কমিটি (বাধ্যতামূলকভাবে তিন জন মহিলা) তৈরি হয়েছিল গত বছরের শেষ ভাগে। সেই সময় দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ জানিয়েছিলেন, পিকে-র দলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে প্রতিটি কমিটিকে। ফোন এসেছে নতুন করে গঠিত ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের কাছেও।

লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হওয়ার পরেই রাজ্যের শাসক তৃণমূল ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরেছে। কেন তৃণমূলের থেকে মুখ ঘোরালো মানুষ, মানুষের ক্ষোভ কোথায়, দলের খামতি কোথায়— এ সব জানতে পিকের পরামর্শে প্রথমেই দিদিকে বলো কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে শুধু ফোন নম্বর বা ওয়েবসাইট তৈরি করে সরাসরি অভিযোগ নেওয়াই নয়, কর্পোরেট ধাঁচে কীভাবে জনসংযোগ রাখতে হবে তার নানা ধাপ সাজিয়ে দিয়েছিলে পিকে-র দল। বিধায়ক, মন্ত্রী, যুবনেতাদের পর প্রতিটি ব্লকের ব্লক-সভাপতি ও পুরশহরে শহর সভাপতিদেরও ওই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছিল। প্রতিটি ব্লকের গ্রামে গ্রামে ও পুর শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জনসংযোগ তৈরি করে মানুষের অভাব অভিযোগ শোনা ও সেগুলির বিহিত করার রাস্তা তৈরি করতেই এই উদ্যোগ বলে দাবি দলের নেতাদের। তারপরে পুরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই সমীক্ষা দলকে আসন্ন পুরভোটে মজবুত জায়গায় রাখবে বলে আশা তৃণমূল নেতাদের।

সিউড়ির বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউড়ি, যাঁরা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে দুটি পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরেছেন, তাঁরা বলছেন, ‘‘বিভিন্ন ওয়ার্ডে সমস্যা উঠে এসেছে। সেগুলি মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু একটি ওয়ার্ডে দলের পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায়, কোন পথে এগোনো উচিত, কাউন্সিলররা কেমন কাজ করেছেন পিকে-র দল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে সঠিক তথ্যই দলকে জানাবে। সেটা দলের জন্যই লাভদায়ক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC Civic Issues
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy