পুরুলিয়ার রবীন্দ্রভবনে। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’-সহ নানা বিষয়ে নিয়ম করে রাজ্য সরকারকে বিঁধছে বিরোধীরা। এই প্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে রাজ্য সরকারের সমালোচনা থেকে সংগঠনের সদস্যদের বিরত থাকার পরামর্শ দিলেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র।
রবিবার পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠিত সংগঠনের পুরুলিয়া শাখা সম্মেলনে অশোক বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, অন্য রাজ্য পেনশন বন্ধ করলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেনশন তুলে দেননি। তবু সংগঠনেরই কিছু লোকজন কখনও কখনও প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’’
সম্মেলনে হাজির পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া খোলাখুলি বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে জেলায় আমাদের দলের ফল ভাল হয়নি। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, শিক্ষকদের অনেকেই দলের জন্য তাঁদের যে ভূমিকা পালন করা দরকার ছিল, তা করেননি। কেউ কেউ বসে গিয়েছিলেন। কেন জানি না।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, তৃণমূলপন্থী শিক্ষকদের একাংশই যে রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন, অশোক ও সৌমেনের মন্তব্যে তা পরিষ্কার।
এ দিন শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর হাত শক্ত করার অনুরোধ করেন অশোক। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করছেন। সাধারন মানুষ আপনাদের দেখেই সরকারি প্রাথমিক স্কুলে তাঁদের সন্তানদের পাঠাচ্ছেন। এই স্কুলগুলোয় বেশির ভাগ প্রান্তিক শ্রেণির মানুষজনের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। তাদের যদি ভাল করে শিক্ষাদান করতে না পারি, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’’ সঙ্গে জোড়েন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিঃশুল্ক করেছেন। কেন করেছেন? বাংলার সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর উপরে যাতে আর্থিক চাপ না পড়ে।’’ অশোক স্বীকার করেছেন, ‘‘কিছু স্কুলে পড়ুয়া কমছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এ ভাবে যদি পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে, যদি স্কুলই বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমার-আপনার কী হবে?’’ সংগঠনের সদস্যদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার বা হেলথ স্কিমের বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে আনা হয়েছে।’’
সম্মেলনে বান্দোয়ানের বিধায়ক তথা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি রাজীবলোচন সরেন বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিধি মেনে যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার ‘ডিএলএড’ প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিল না, মুখ্যমন্ত্রী সে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন।’’ শিক্ষকদের উদ্দেশে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘তৃণমূল যাতে শক্তিশালী হতে পারে, তা মাথায় রেখে আপনাদের কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’’
অনুষ্ঠান শুরুর সময় বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল। প্রায় ১৫ মিনিট অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহেই অনুষ্ঠান চলে। সম্মেলনে হাজির ছিলেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য সমীরণ মুখোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, মহিলা সংগঠনের নেত্রী সুজাতা খাঁ, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি, সংগঠনের সভাপতি বিমলকান্ত মাহাতো প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy