তারাপীঠ মন্দিরে নতুন খাতার পুজো। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন ব্যবসায়ীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশেষ দিনে বিভিন্ন মন্দিরে ভোর থেকেই ভিড় উপচে পড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের। তারাপীঠ মন্দিরেও তার ব্যতিক্রম হয় না। এই মন্দিরে মা তারার কাছে দূর দূরান্ত থেকে হালখাতা নিয়ে হাজির হন ব্যবসায়ীরা। বছরভর ব্যবসা যেন ভাল হয়, তার জন্য দেবীর কাছে হালখাতার পুজো দিয়ে ব্যবসায়ীরা বছর শুরু করেন। এবার পয়লা বৈশাখে ভোটের মরসুমে তারাপীঠে পুজো দিলেন প্রার্থীরাও।
নতুন বছরের প্রথম দিন দূর দূরান্ত থেকে ও স্থানীয় এলাকার ব্যবসায়ীরা যাতে তাঁদের পুজো সুষ্ঠুভাবে দিতে পারেন, তার জন্য মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে আলাদা করে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ থেকে শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য মন্দির চত্বরে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনেরও এই দিনটির জন্য বিশেষ নজরদারি থাকে।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভোর থেকেই তারাপীঠে হালখাতার পুজো দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা পুজোর লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ ছাড়া পয়লা বৈশাখ এ বছর রবিবার পড়ে যাওয়ায় মন্দিরে দর্শনার্থীদের ভিড়ও ভালই হয়েছে।” তারাপীঠ মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেনন, “মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এই বিশেষ দিনে জন্য ভিড় সামাল দিতে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা থাকে।”
এ দিন সকালে তারাপীঠে গিয়ে দেখা গেল, মন্দির চত্বরে হালখাতার পুজো দেওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। হাওড়ার উলুবেড়িয়ার একটি কারখানার কর্মচারী সুজয় বেরা জানান, কোম্পানির ব্যবসা সংক্রান্ত হালখাতার পুজো দেওয়ার জন্য কাল গভীর রাতে তারাপীঠে এসেছি। স্নান করে সকাল সাড়ে পাঁচটায় পুজোর লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা দুয়েক পরে পুজো দিতে পেরেছি। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমীর দত্ত জানান, ব্যবসায়ীদের হালখাতার পুজো দেওয়ার রেওয়াজ তারাপীঠে দীর্ঘদিনের। সেই কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এদিন তাঁদের দোকানের হালখাতার পুজো দেওয়ার জন্য ভিড় করেন।
অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের মরসুমে তারাপীঠে পুজো দিয়ে ভোট প্রার্থীরা অনেকেই প্রচার শুরু করেছেন। নতুন বছরের প্রথম দিনেও বহু প্রার্থী তারাপীঠে সকালেই পুজো দিতে উপস্থিত হয়েছেন। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ও বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ পয়লা বৈশাখের দিন তারাপীঠে পুজো দিলেন। তারাপীঠে পুজো দেওয়ার পরে এলাকায় ফিরে গিয়ে সোমবার মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি। পুজো দেওয়ার পরে গৌরীশঙ্কর বলেন, “মাসে দু’তিন বার তারাপীঠ আসি। এবার প্রার্থী হওয়ার পরে মায়ের কাছে পুজো দিয়ে যাতে অশুভ শক্তি পরাজিত হয় সেই কামনা করলাম। এ ছাড়া দেশ-দশের মঙ্গল কামনা করলাম।”
এ ছাড়া তারাপীঠে পুজো দিয়েই প্রচার শুরু করেছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর। শনিবার রামপুরহাটে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার কাজ সেরে তারাপীঠেই রাত্রিবাস করে পয়লা বৈশাখের দিন ভোরে পুজো দিয়ে সিউড়িতে প্রচারে বেরিয়ে যান তিনিও। পুজো দেওয়ার পরে বিজেপি প্রার্থী বলেন, “অন্যান্য বার বছরের প্রথম দিনে দক্ষিণেশ্বর না হয় কালীঘাটে পুজো দিই। এবার মা তারার কাছে পুজো দিলাম। মায়ের কাছে প্রার্থনা করলাম আমি যে যুদ্ধে নেমেছি সেই যুদ্ধে জয়ী হয়ে আমি যেন বীরভূমবাসীর জন্য অনেক ভাল কাজ করতে পারি।”
অন্য দিকে, প্রতিবারের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে তারাপীঠে পুজো দেন বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। আশিস বলেন, “রাজ্যবাসীর মঙ্গল কামনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে সঙ্কল্প করেও পুজো দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy