পুণ্যার্থী: কৌশিকী অমাবস্যায় সেই চেনা ভিড় এ বার নেই তারাপীঠে। হতাশ ব্যবসায়ীরা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
অতিমারির ধাক্কায় দু’বছর এমনিতেই ব্যবসায় মন্দা। তারাপীঠের পর্যটন ও ব্যবসায়ী মহল তাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিলেন কৌশিকী অমাবস্যার দিকে। ভেবেছিলেন, দু’বছরের ক্ষতির ধাক্কা কিছুটা পুষিয়ে নেবেন এ বার। কিন্তু, প্রত্যাশা মতো ভিড় না-হওয়ায় যারপরনাই হতাশ তারাপীঠের হোটেল-লজ মালিক এবং ছোট-বড় ব্যবসায়ীরাও। মুখ ভার সেবায়েত, পুরোহিতদেরও। তাঁরা তাকিয়ে আছেন আজ, শনিবারের দিকে।
শুক্রবার দুপুর বারোটার পরে কৌশিকী অমাবস্যা তিথি শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত অমাবস্যা তিথি থাকবে। শুক্রবার বিকেলেও তারাপীঠে দর্শনার্থীর সেই চেনা সমাগম ঘটেনি। অধিকাংশ লজের বহু ঘর এখনও ফাঁকা। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই সমস্ত লজের ঘর ভর্তি হবে কিনা তাই নিয়ে চিন্তায়, মালিকরা। অথচ অন্যান্য বছর কৌশিকী অমাবস্যার সময় তারাপীঠে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়। তিল ধারণের জায়গা থাকে না হোটেল-লজে।
করোনা কারণে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তারাপীঠ মন্দির কমিটি থেকে শুরু করে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ ও তারাপীঠ লজ মালিক সমিতি— সব মহলই আশা করেছিল, এ বছর ৫ লক্ষেরও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে। পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। তারাপীঠ আসার জন্য হাওড়া থেকে রামপুরহাট বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, ভিড় তেমন না-হওয়ায় হতাশ সকলেই।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অতিমারির পরে তারাপীঠ মন্দির খোলার পর থেকে দর্শনার্থীদের ভালই সমাগম ঘটেছে। বিশেষ করে ১৫ অগস্ট তারাপীঠে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছিল। ফলে এবছর কৌশিকী অমাবস্যায় অন্যান্য বারের থেকে বেশি লোক সমাগম ঘটবে এটা আশা ছিল। কিন্তু, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আশা মতো ভিড় হয়নি।’’ তারাপীঠ লজ মালিক সমিতি মালিক সমিতির সভাপতি সুনীল গিরির দাবি, ‘‘অনেক লজ এখনও খালি আছে। কিছু কিছু লজে বুকিং পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। যতটা আশা ছিল, তার তুলনায় অনেক কম দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। এর ফলে অনেক লজ ব্যবসায়ী আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’’
ভিড় কম হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন তারাপীঠের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও। মন্দিরের লাগোয়া পুজোর ডালার দোকান আছে সেবায়েত রামপ্রসাদ রায়ের। তিনি বলছিলেন, ‘‘দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার কৌশিকী অমাবস্যায় প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হবে এই আশায় তারাপীঠের অনেক পুজোর ডালার দোকানি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্যাঁড়া তৈরি করেছেন। কিন্তু, পুণ্যার্থী কম হওয়ায় কী ভাবে ওই প্যাঁড়া বিক্রি করবেন, দোকানিরা বুঝে উঠতে পারছেন না।’’
পুজো প্রস্তুতিতে অবশ্য খামতি থাকছে না। আলো ও ফুলে সাজানো হয়েছে মন্দির চত্বর। মন্দির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় জানান, কৌশিকী অমাবস্যায় মা তারাকে দু’বার অন্নের ভোগ নিবেদন করা হয়। কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষ তিথিতে মা তারার নিশিপুজো হয়। ওই সময় মাকে স্বর্ণালঙ্কার ও ডাকের সাজে সাজানো হয়। নিশিপুজোর সময় খিচুড়ির ভোগ নিবেদন করা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য সারারাত মন্দির খোলা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy