জনসমক্ষে: তারাপীঠে ঢোকার মুখে এমনই পাহাড় জমেছে জঞ্জালের। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
নজরে অটো থেকে ট্রেকার
রামপুরহাট স্টেশন থেকে তারাপীঠ যাওয়ার জন্য প্রধান যোগাযোগ অটো এবং ট্রেকার। তারাপীঠে আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই অটো কিংবা ট্রেকার চালকদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে তারাপীঠ থেকে একটি বাস রামপুরহাট স্টেশনে যাত্রী ওঠানো-নামানো শুরু করলে তার প্রতিবাদে অটো-ট্রেকার চালকদের সঙ্গে তারাপীঠের ছোটগাড়ির চালকদের মারামারিতে একদিন যাত্রী পরিষেবা বন্ধ ছিল। তাতে ভোগান্তিতে পড়েন দর্শনার্থীরা। অটো, ট্রেকার চলাচল বন্ধ থাকলে রামপুরহাট স্টেশন থেকে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যন্ত্রচালিত ভ্যান রিকশা করে তারাপীঠ যাতায়াত করতে হয়। কৌশিকী অমাবস্যার দিনগুলোতে যাতে অটো, ট্রেকার চলাচল স্বাভাবিক থাকে তার জন্য ইতিমধ্যে পুলিশ, প্রশাসন অটো-ট্রেকার চালকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, অটো-ট্রেকার চালকদের বিষয়টি পুলিশ, প্রশাসন দেখছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের আশা সব ভাল ভাবেই মিটে যাবে।’’
প্লাস্টিক দূষণ রুখতে জোর
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে তারাপীঠ মন্দির এবং সংলগ্ন এলাকায় প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও অবাধে প্লাস্টিকের ব্যবহার এখনও চলছে। মন্দির চত্বরেই প্লাস্টিকের প্যাকেটে তারামায়ের ভোগ থেকে প্রসাদ দর্শনার্থীদের দেওয়া হয়। সেবায়েতদের অনেকে প্লাস্টিক দর্শনার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন, এমন দৃশ্যও দেখা যায়। আবার তারাপীঠ আনাজ বাজার, মাছ বাজারেও রমরমিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার হতে দেখা গিয়েছে। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা নজরদারি চালাই। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে লুকিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিপ্যাকেট ব্যবহার করছেন। এটা রোখা হবে।’’ কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণব চট্টোপাধ্যায়দের মতো সেবায়েতরাও মনে করেন, নিষিদ্ধ জিনিসের ব্যবহার না হওয়াই উচিত। মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কৌশিকী অমাবস্যার দিনে তারাপীঠে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ রাখার ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালানো হবে। সেই সঙ্গে প্রচারও চালানো হবে।’’
জঞ্জাল সরবে কবে
তারাপীঠ ঢোকার আগে চিলার মাঠ সংলগ্ন এলাকা হোক বা চিলার মাঠ পেরিয়ে সুদৃশ্য তোরণদ্বার সংলগ্ন এলাকা, স্তূপীকৃত জঞ্জালে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। মঙ্গলবার এলাকা ঘুরে দেখা গেল কৌশিকী অমাবস্যার আগের দিন তারাপীঠ ঢোকার আগে স্তুপীকৃত জঞ্জালের দুর্গন্ধে তারাপীঠে আসা দর্শনার্থীদের অনেকেই নাকে রুমাল দিয়ে এলাকা পেরিয়ে যাচ্ছেন। তারাপীঠের ভিতরেও মন্দির এলাকা সংলগ্ন এলাকা থেকে শ্মশান এলাকা, তারাপীঠের ভিতরে রামপুরহাট-সাঁইথিয়া রাস্তার ধারে ধারে, দ্বারকা সেতু থেকে তারাপীঠ মন্দির যাওয়ার রাস্তা এবং মুণ্ডমালিনী তলা যাওয়ার রাস্তা সর্বত্র আবর্জনা পড়ে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তারাপীঠের জঞ্জাল রামপুরহাট পুরসভার জঞ্জাল ফেলার জায়গায় ফেলা হয়। দু’দিন তা বন্ধ থাকার জন্য চিলার কাঁদর মাঠ সংলগ্ন এলাকায় ফেলা হয়েছে। আজ, কালের মধ্যে ওই জঞ্জাল তুলে কড়কড়িয়া এলাকায় নতুন ভ্যাটে ফেলা হবে। কৌশিকী অমাবস্যার দিনগুলোতে তারাপীঠ এলাকা যাতে নোংরা, আবর্জনা মুক্ত থাকে তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
দ্বারকা দূষণ
তারাপীঠের সমস্ত লজের জল যাতে দ্বারকা নদে না পড়ে, তার জন্য তারাপীঠে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রকল্পে পাইপলাইন বসানোর কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ দাবি করেছে। সেই সঙ্গে দূষিত জল পরিশোধিত করার জন্য তারাপীঠ থেকে আটলা যাওয়ার পথে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানোর কাজ চলছে। দ্বারকা নদের দু’পাড় বাঁধানোর কাজও চলছে। মঙ্গলবার তারাপীঠে গিয়ে দেখা যায়, দ্বারকা নদের দক্ষিণদিকে শ্মশান এলাকা পরিচ্ছন্ন থাকলেও, উত্তরদিকে এখনও দ্বারকা নদে ময়লা ফেলা হচ্ছে। জায়গায় জায়গায় আবর্জনা জমে থাকতেও দেখা যায়।
যানজট রুখতে
এখনও এলাকায় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হয়নি। কৌশিকী অমাবস্যার দিনগুলোতে তারাপীঠে যানজট এড়াতে রামপুরহাট থেকে আসা অটো, ট্রেকারগুলি আটলা মোড় পর্যন্ত আসবে। আটলা মোড় থেকে চাকপাড়া হয়ে ফের যাত্রী নিয়ে রামপুরহাট ফিরবে, এমনই দাবি করেছেন সুকুমার মুখোপাধ্যায়। যে সমস্ত লজে গাড়ি রাখার জায়গা আছে, সেই লজে যাত্রীরা গাড়ি রেখে লজে উঠবেন। সেই সঙ্গে তারাপীঠ যাওয়ার রাস্তার উপরে গাড়ি বা অটো ট্রেকার যাতে না দাঁড়িয়ে না থাকে তার জন্য পুলিশ, প্রশাসন বিশেষ ভাবে নজরদারি চালাবে বলে জানিয়েছেন তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy