রামপুরহাটে, মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের বাইরে বিজেপির এই অবস্থান মঞ্চেই বৃহস্পতিবার আসার কথা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। নিজস্ব চিত্র sabyasachi.islam@abp.in
পুলিশের অনুমতি না-মেলায় ফের আটকে গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি। এ বার রামপুরহাটে।
রামপুরহাটে বিজেপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ কর্মসূচি ঘিরে রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলা ধর্না ও অবস্থান মঞ্চে বৃহস্পতিবার থাকার কথা ছিল বিরোধী দলনেতার। বিজেপির দুই সাংগঠনিক জেলার (বোলপুর ও বীরভূম) একাধিক নেতা ও কর্মী এ দিন এসেছিলেন ধর্না মঞ্চে। কিন্তু, পুলিশের অনুমতি না-পাওয়ায় শুভেন্দু উপস্থিত থাকতে পারেননি। তিনি নিজেই সে কথা এক্স-হ্যান্ডলে লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শুভেন্দু লেখেন, ‘‘রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাওয়া রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির গণতান্ত্রিক অধিকার অস্বীকার করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও প্রশাসনের প্রচেষ্টা আজ নিয়মে পরিণত হয়েছে।’’ শুভেন্দুর দাবি, এ দিনের কর্মসূচিতে তাঁর যোগ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন জমা পড়ে তিন দিন আগে। পুলিশ শেষ মুহূর্তে যথাযথ কারণ না-দেখিয়ে অনুমতি দেয়নি।
বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, ‘‘এক জন আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে আমি এ দিন রামপুরহাট যাব না।’’ তবে, ফের তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন। পাশাপাশি ১৫ অগস্টের আগে রামপুরহাটে বড় ধরনের কর্মসূচি নেবেন বলেও দলীয় কর্মীদের বার্তা দেন তিনি। যদিও পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, বিজেপির ধর্না ও অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির অনুমোদন ছিল না।
রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার থেকে অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। এ দিন সেখানে সশরীর উপস্থিত থাকতে না-পারলেও বিকেলে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার মোবাইলে ভার্চুয়াল বক্তৃতা করেন শুভেন্দু।
দলের কর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন, রামপুরহাটের কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিজেপির রামপুরহাট নগর মণ্ডল কমিটির সভাপতিকে জানিয়েছে। কোনও রকম আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হলে কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দেন শুভেন্দু। তিনি জানান, রাজ্য জুড়ে এই কর্মসূচি চলছে। সব জায়গাতেই পুলিশ-প্রশাসনের বাধা সত্ত্বেও বিজেপি কর্মীরা এই কর্মসূচি করছেন।
এর পরেই বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘রামপুরহাটের কর্মসূচির জন্য আমি গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলাম। তার পরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার নিরাপত্তা আধিকারিকদের বলা হয় যে এই কর্মসূচির কোনও অনুমতি নেই। এবং এসডিপিও (রামপুরহাট) লিখিত ভাবে জানান, এই কর্মসূচির জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।’’
শুভেন্দু দলের জেলা সভাপতি এবং রামপুরহাট নগর মণ্ডল কমিটিকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘গত তিন বছরে আমার প্রায় ১০০টি সভার অনুমতি পুলিশ দেয়নি। আমি আদালতের অনুমতি নিয়ে সভা করেছি। এ ক্ষেত্রে এসডিপিও বা এসডিও আপনাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলে সম্পূর্ণ আইনি নিরাপত্তা আমি দেব।’’ তাঁর সংযোজন, ১৫ অগস্টের আগে প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি রামপুরহাটে মিছিল-সহ একটি বড় কর্মসূচি নেবেন।
ধ্রুব সাহার দাবি, ‘‘যথাযথ ভাবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুলিশ- প্রশাসন ইচ্ছেকৃত ভাবে বিরোধী দলনেতার কর্মসূচি বাতিল করেছে।’’ একই অভিযোগ করেছেন দলের রামপুরহাট মণ্ডল কমিটির সভাপতি সুরজিৎ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি না-থাকলে ২৩ তারিখ থেকে তিন দিন ধরে সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালু থাকল? তা-ও মহকুমাশাসকলের কার্যালয়ের বাইরে! এ ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার কর্মসূচি কেন বাতিল করা হল, সেটা পুলিশ-প্রশাসন জানে।’’
অন্য দিকে, মহকুমাশাসক সৌরভ পাণ্ডে বলেন, ‘‘মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের সামনে তিন দিন ধরে মাইক বাজিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির কোনও প্রশাসনিক অনুমতি ছিল না।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ধর্না মঞ্চের জন্য সঠিক পদ্ধতি মেনে আবেদন করা হয়নি। সঠিক ভাবে আবেদন জানালে অনুমতি দেওয়া হত।
জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই রামপুরহাট, সিউড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। আইন অনুযায়ী আবেদন না জানালে পুলিশ-প্রশাসন তো বাধা দেবেই।’’ মলয়ের কটাক্ষ, ‘‘উনি (শুভেন্দু) তো সব সময়ই আদালতের দ্বারস্থ হন। এ ক্ষেত্রেও তাই করলেন না কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy