ওন্দা ফুটবল ময়দানে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
দলের কঠিন সময়ে যে সব পুরনো কর্মী ফিরে আসছেন, নেতারা তাঁদের জন্য সমস্ত রকম ত্যাগ করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করলেন তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার ওন্দার সভা থেকে তিনি মনে করিয়ে দেন, গত পুরনির্বাচনে তাঁরই কৌশলে এই জেলারই সোনামুখী পুরসভা তৃণমূল বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। আগামী পুরনির্বাচনেও বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতা ধরে রাখবে বলে কর্মীদের আশ্বাস দিয়ে গেলেন তিনি।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে জেলার দু’টি কেন্দ্রেই বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। ভোট প্রাপ্তির নিরিখে এই দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের সব ক’টিতেই তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। লোকসভা ভোট-পরবর্তী সময়ে ওন্দা ব্লকে বেশ কিছু পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রতীকে জেতা জনপ্রতিনিধিরা বিজেপিতে যোগ দেন।
এই পরিস্থিতিতে কয়েক সপ্তাহ আগে ওন্দার ফুটবল ময়দানে জনসভা করে আগামী পুরভোট ও বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ‘উপড়ে ফেলার’ ডাক দিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ দিন সেই একই মাঠে সভা করে শুভেন্দু তারই জবাব দিলেন বলে মনে করছেন জেলা রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহল।
বৃষ্টিভেজা দিনেও এ দিন শুভেন্দুর জনসভায় তৃণমূল কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। ২০১৬ সালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দল থেকে সরে দাঁড়িয়ে বিধানসভা ভোটে জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁয়ের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন তৎকালীন ব্লক তৃণমূল সভাপতি অশোক চট্টোপাধ্যায়। সপ্তাহ খানেক আগে সেই অশোকবাবু-সহ ওন্দা ব্লকের বেশ কয়েক জন পুরনো তৃণমূল কর্মী ফের তৃণমূলে যোগ দেন।
এ দিন অশোকবাবুকে ওন্দা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “এই কঠিন সময়েও অশোকবাবু আমার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি দলে ফিরেছেন। তাঁকে আমি ওন্দা ব্লক তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলাম। তা শুনে ওন্দার বিধায়ক অরূপবাবু এক কথায় রাজি হন।’’
অশোকবাবু বলেন, ‘‘দলের দুর্দিনে এক সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। এখনও রাজি আছি। পুরনো তৃণমূল কর্মী যাঁরা এই দুর্দিনে ফের দলে আসছেন তাঁদের যোগ্য সন্মান দিতে দলের নেতারা প্রস্তুত।”
তবে যাঁরা তৃণমূলে থেকে দলের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করেছেন, দল তাঁদের পাশে দাঁড়াবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “যাঁরা দলে থেকে নীতি বিরুদ্ধ কাজ করেছেন। অবৈধ বালি খাদান চালিয়েছেন, তাঁদের পাশে দল দাঁড়াবে না।” সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যাতে প্রকৃত মানুষ পায় তা দেখার জন্য তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “দেখবেন প্রকৃত মানুষ যাতে সরকারি সুবিধা পান। মাঝে যেন কেউ না হস্তক্ষেপ করতে পারেন।”
ওন্দার বিধায়ক দাবি করেন, “কাটাবাড়ি ও নাকাইজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমাদের যে সদস্যেরা বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এ দিন ফের তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করছে মানুষ তৃণমূলের প্রতি আস্থাশীল।” বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখার পাল্টা দাবি, “তৃণমূল থেকে বীতশ্রদ্ধ হয়েই তাঁরা এসেছিলেন। তৃণমূল কাউকে জোর করে সভায় নিয়ে গিয়েছিলেন কি না জানি না।”
এ দিনের তৃণমূলের সভায় ভিড় নিয়েও তর্জা শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। অরূপবাবুর দাবি, সভায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের দাবি, ভিড় হয়েছিল প্রায় ১২ হাজার মানুষের। যদিও অমরনাথবাবু দাবি করেন, “সারা জেলা থেকে লোক এনেও তৃণমূল মাঠ ভরাতে পারেনি। ভিড় মেরেকেটে সাড়ে তিন হাজার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy