প্রতীকী ছবি।
জলের পরীক্ষা মানে জীবন সুরক্ষা— হাতেকলমে তা শিখবে স্কুলের পড়ুয়ারা। রাষ্ট্রীয় আবিষ্কার সপ্তাহে জেলার বাছাই করা ৩৮টি স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের এমন সুযোগ দিয়েছে রাষ্ট্রীয় শিক্ষা মিশন। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ওই কর্মসূচি। রাষ্ট্রীয় আবিষ্কার অভিযানের অঙ্গ হিসেবে তা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। জলের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ ও তা হাতেকলমে পরীক্ষা করার সুযোগ পেয়ে খুশি পড়ুয়ারা।
রাষ্ট্রীয় শিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক বাপ্পা গোস্বামী বলেন, ‘‘জল নিয়ে সচেতনতা তৈরি হোক পড়ুয়াদের মধ্যে, এই লক্ষ্যেই শিক্ষা দফতরের এই কর্মসূচি। হাতেকলমে জল পরীক্ষা করতে পারলে পড়ুয়ারা শুধু নিজেরা সচেতন হবে তাই-ই নয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধিরও মাধ্যম হতে পারে।’’ তিনি জানান, গবেষণাগারের পরিকাঠামো ভাল রয়েছে, জেলার ১৯টি ব্লক থেকে ব্লক পিছু এমন ২টি করে স্কুল বেছে নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষা মজাদার,আকর্ষণীয় ও অর্থবহ করতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ‘রাষ্ট্রীয় আবিষ্কার অভিযান’ কর্মসূচি নিয়েছে। তার লক্ষ্য, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করা এবং উৎসাহিত করে স্কুলে স্কুলে ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিবেশে তৈরি করা। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হল রাষ্ট্রীয় আবিষ্কার সপ্তাহ উদযাপন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের মধ্যে আবিষ্কারের নেশা ধরাতে মন্ত্রকের প্রস্তাব অনুযায়ী শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞান ও গণিত বিভাগ এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এনসিইআরটি) জল পরীক্ষার বিষয়টি বেছেছিল। বলা হয়েছিল, জল যেহেতু জীবনধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার উপাদন হোক জল। এতে দেশ জুড়ে পানীয় জল নিয়ে আরও স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হতে পারবে।
জলে ঠিক কী কী পরীক্ষা
করবে পড়ুয়ারা?
সর্বশিক্ষা মিশনের রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর বিকাশ রায় জানান, নির্বাচিত স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুল ও আশপাশের এলাকা থেকে জলের বিভিন্ন নমূনা সংগ্রহ করবে। পরে সেই জলের তিনটি পরীক্ষা করে দেখবে। প্রথম, ফোমিং ক্যাপাসিটি। দুই, হাইড্রোজেন আয়ন কনসেনট্রেশন বা পিএইচ-এর মাত্রা। তিন, অ্যালকালিনিটি বা ক্ষারত্ব। এই তিনটি পরীক্ষা করলেই পড়ুয়ারা বুঝতে পারবে, যে জল তারা বা এলাকার মানুষ পান করছেন বা ব্যবহার করছেন তা নিরাপদ কিনা।
এখানেই শেষ নয়। প্রতিটি স্কুল জলপরীক্ষার ডেটা ‘আপলোড’ করবে রাষ্ট্রীয় আবিষ্কার অভিযানের নিজস্ব সাইটে।
নির্বাচিত স্কুলগুলির মধ্যে সাঁইথিয়া আমোদপুর জয়দুর্গা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এই এলাকার জল পানের পুরোপুরি অযোগ্য না হলেও নিরাপদ নয়। পড়ুয়াদের যাতে বিষজল পান করতে না হয় সে জন্য পুজোর আগেই নিজস্ব তহবিল থেকে স্কুলে জল পরিশ্রুত করার যন্ত্র লাগানো হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, সরকারের এই কর্মসূচিতে হাতেকলমে জল পরীক্ষা করে পড়ুয়ারা উপলব্ধি করতে পারবে, কেন ওই যন্ত্র বসানো জরুরি ছিল।
প্রায় একই মত বোলপুর নীচুপট্টি নীরদবরণী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দ্বীপেন্দু ধরেরও। তিনি বলেন, ‘‘খুব সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়ারা জলের গুণগত মান বুঝতে পারবে। শুধু পানীয় জল নয়, কৃষি ক্ষেত্রে ও জলের পিএইচ মাত্রা পরিমাপ জরুরি।’’ দুবরাজপুর শ্রী শ্রী সারদা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক শুভাশিস চট্টোরাজ বলছেন, ‘‘জলের দূষণ থেকেই নানা রোগের সংক্রমণ হয়। জলের মান কেমন তা পড়ুয়ারা নিজেরা বুঝবে এমন কর্মসূচির প্রয়োজনীয় ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy