বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি এক দম্পতি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে তাঁদের বাসভবন-সহ আড়াই বিঘা জমির দান করেছিলেন। তার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের বৈঠকে ওই দান করা বাসভবনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেন স্ট্যাটিসটিকস্ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুধাংশু মাইতি। এর পরেই ক্লাস করতে আপত্তি জানান সেই বিভাগের পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে শিক্ষাভবন অনেক দূর হওয়ার কারণে তাঁদের নানা রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই মর্মে বুধবার স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানকে স্মারকলিপি দিয়ে প্রতিবাদ জানান। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয় শোরগোল। পড়ুয়ারা আট দফা দাবির একটি স্মারকলিপি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে সেখানে ক্লাস করতে অস্বীকার করেছেন। যদিও এই নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনও অবধি কোনও উত্তর মেলেনি।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, ওই বাড়িটি তাঁদের বিভাগ থেকে অনেক দূরে। ফলে, শিক্ষাভবনের ল্যাবরেটরি, গ্রন্থাগার ও অফিস যাতায়াতের ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হবে তাঁদের। এই দূরত্বের ফলে পড়ুয়াদের গবেষণার কাজও প্রভাবিত হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। এ ছাড়া, বাড়িটি বিশ্বভারতী সেন্ট্রাল অফিস, গ্রন্থাগার, ছাত্রদের হস্টেল-সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন থেকেও অনেক দূরে। তাই প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্যও পড়ুয়াদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে। এ ছাড়া বাড়িটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। সেখানে প্রতিবেশীরা ব্যক্তিগত ও সামাজিক অনুষ্ঠান করলে ক্লাসে তার প্রভাব পড়বে। সব মিলিয়ে পড়ুয়ারাই সমস্যায় পড়বেন বলে তাঁদের দাবি। পাশাপাশি, তাঁদের আরও অভিযোগ ওই বাড়িটি বসবাসের উদ্দেশে নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে একেবারেই উপযুক্ত নয়। এ বিষয়ে এক পড়ুয়া বলেন, “আমাদের বিভাগ তুলনামূলক ভাবে ছোট। এই বিভাগটিকে দু’ভাগে ভাগ করলে বিভাগীয় সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই পড়ুয়ারা বর্তমান শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ জানান।”
অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফারের দাবি, বাসভবনটি জনবহুল এলাকায় হওয়ার কারণে প্রথমে কোনও বিভাগ তেমন আগ্রহ দেখায়নি। পরে স্ট্যাটিসটিকস্ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুধাংশু আগ্রহ দেখালে উপাচার্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের হাতে বাড়িটি তুলে দেন। কিন্তু ওই বিভাগেরই অধ্যাপক অরিন্দম চক্রবর্তীর অভিযোগ, বিভাগের বোর্ড অফ স্টাডিজের অনুমোদন ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুধাংশু। এই মর্মে অরিন্দমও বিভাগীয় প্রধানকে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। তবে পড়ুয়ারদের প্রতিবাদে ঘটনায় জটিলতা আরও বেড়েছে বলে তাঁর দাবি।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভাগের হাতে ওই বাড়িটি তুলে দেন। তার পরেই শুরু হয় পড়ুয়াদের প্রতিবাদ। যদিও, এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
প্রসঙ্গত গত ৩১ আগস্ট বিশ্বভারতীকে প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি দান করেছিলেন পাঠভবনের প্রাক্তনী অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়। ওই দিন তিনি শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লির বিশাল বাসভবনসহ আড়াই বিঘা জমির দলিল উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর হাতে তুলে দেন। এর পর ওই বাসভবনটি কোন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হবে, তা স্থির করতে গত ৪ সেপ্টেম্বর একটি বৈঠক ডাকেন উপাচার্য। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সহ সমস্ত বিভাগের অধ্যক্ষ ও কিছু বিভাগীয় প্রধান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy