ব্যান্ডের সুরে। সিউড়ি ডিআরডিসি হলে। নিজস্ব চিত্র।
কেউ বললেন, স্কুল মানে ‘বন্ধু হইচই এবং পড়াশোনা।’ কারও কাছে ক্লাসটিচার, এগজাম স্রেফ ‘কেমন একটা ভয় পাওয়া!’ আবার কারও কাছে টিফিন হল ‘দেদার আড্ডা, বন্ধুদের টিফিন চুরি করে খাওয়া’, টিউশন ব্যাচ মানে ‘অমুক স্যারের কাছে পড়তাম, শুধু মেয়েরা!’ এভাবেই স্মৃতি থেকে ফিরে ফিরে স্কুলবেলাকে দেখলেন সিউড়ির ১১টি স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররা।
সোমবার স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রাক্তনীদের মিলিত প্রয়াসে হয়ে গেল রি-ইউনিয়ন বা পুনর্মিলন অনুষ্ঠান। নাম ‘আদরের ডাক।’ দিনভর সিউড়ির ডিআরডিসি হলে ওই অনুষ্ঠানে মিশে ছিল শহরের একঝাঁক তরুণ-তরুণীর টুকরো টুকরো কথায়, কবিতায়, গানে স্কুলবেলার অনুভূতি। তাঁদের কবিতা, গান, স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে স্কুলের দিন ফিরে আসে। ছিল ব্যান্ডের অনুষ্ঠানও। সুরে সুরে অনেক না বলা কথা, স্কুলের আনন্দ, বিষাদ, বন্ধুত্ব, প্রথমদিন, বিশেষ দিন, বিশেষ মুহূর্ত, প্রেম, ভাললাগা ভাগ করে নিলেন একে অপরের সঙ্গে। মাতলেন ব্যান্ডের গানের তালে।
‘‘এমন একটি ভিন্ন স্বাদের অনুষ্ঠানের পিছনে শুধুমাত্র আনন্দ বা নির্ভেজাল আড্ডাই কিন্তু একমাত্র উদ্দেশ্য নয়।’’ বলছিলেন উদ্যোক্তা সুবিনয় দাস, সৈকত বল, রুহিল আলম, চিরন্তন দে, মেঘনা মুখোপাধ্যায়, ঋত্বিকা মণ্ডলেরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রথমে মাথায় ছিল তাঁদের যারা স্কুল ছেড়ে এসেছেন তাঁরা সকলে যদি একত্রিত হওয়ার বিষয়টি। ‘‘সকলের সঙ্গে নতুন করে যোগসূত্র গড়ে উঠবে। ফের মাততে পারব নির্ভেজাল আড্ডায়। কিন্তু যখন দেখলাম স্কুলের অনুশাসন পেরিয়ে শহরের অনেক এখন নেশার কবলে পড়েছে। বা সংস্কৃতি চর্চায় বা চলার পথে সমস্যা রয়েছে, তখনই ভাবনাটা বদলে গেল। ভাবলাম আড্ডা নয়, শুধু সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চায় ভাবের আদান প্রদানে পাশে দাঁড়াব।’’ বলছিলেন এক প্রাক্তন। কীভাবে শুরু হয় এই উদ্যোগ?
প্রাক্তনীদের কথায়, প্রথমেই কী ভাবে হবে অনুষ্ঠান তার রূপরেখা স্থির করে একটি অনুষ্ঠান সূচি ও নিমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়। যাঁরা অংশ নিতে চান সেই সব সদস্যেদের জন্য একটি আবেদন পত্রও হয়। আবেদন পূরণের সঙ্গে দুটি বিষয় বাধ্যতামূলক ভাবে উল্লেখ করতে হয়েছে। এক, যে অনুষ্ঠানটি হতে চলছে তার সম্পর্কে দৃষ্টি ভঙ্গি। এবং স্কুলবেলার স্মরণীয় ঘটনা, সামান্য কথায় বলতে হয়েছে।
‘আদরের ডাক’ অনুষ্ঠানে সিউড়ি সব ব্যান্ডের দল মিলিতভাবে অনুষ্ঠান করে। কলকাতা থেকে সিউড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন অরিজিৎ বর্মন ওরফে পটা। সুবিনয়, সৈকত, মেঘনারা বলছেন, ‘‘স্যাররা ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ। তাই শুধু স্কুলের প্রক্তনীরা নন, প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের একটা অংশকে সংবর্ধিত করা হয় এ দিন। এ কেবল শুরু। সমাজের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকে মিলেছি সকলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy