শ্রেয়সী মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকে চুল বড় প্রিয় মেয়েটির। নিয়মিত পরিচর্যা, ঠাট্টা করে কেউ চুলে হাত দিলে বিরক্ত হওয়া—এ সব দেখতেই অভ্যস্ত বাড়ির লোকজন। সেই মেয়েই যখন তাঁর সাধের চুল কেটে ফেলার কথা জানিয়েছিলেন, চমকে উঠেছিলেন তাঁরা। তবে যখন জানতে পারেন, ক্যানসার আক্রান্তদের জন্য চুল দান করতে চায় মেয়ে, চোখের জল বাধ মানেনি তাঁদের।
শনিবারই মুম্বইয়ের একটি সংস্থায় চুল পাঠিয়েছেন পাত্রসায়রের বাসিন্দা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজ়িওলজি স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্রী শ্রেয়সী মণ্ডল। শ্রেয়সী জানান, সামাজিক-মাধ্যমে ‘কেমোথেরাপি’ নেওয়া ক্যানসার আক্রান্তদের চুল উঠে যাওয়ার সমস্যা দেখেছিলেন। অর্থের অভাবে তাঁদের অনেকের ‘উইগ’ কিনতে না পারার সমস্যার কথাও সেখান থেকে জানতে পারেন। তার পরে, চুল দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
একটি মিউজিক ভিডিয়ো তাঁকে এ কাজে প্রেরণা জুগিয়েছে জানিয়ে শ্রেয়সী বলেন, “ছোট থেকে আর্ত, অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করতে চাইতাম। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবী রক্তদান করে। কিছু শারীরিক সমস্যা থাকায় তা করতে পারি না। সামাজিক-মাধ্যমে ক্যানসার আক্রান্তদের ‘উইগ’-এর জন্য চুলের প্রয়োজনীয়তার কথা জানতে পেরে মুম্বইয়ের একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তার পরে, ওদের কথামতো প্রায় বারো ইঞ্চি চুল কেটে পাঠিয়েছি।”
সবাইকে জানিয়ে এ কাজ করতে গেলে অনেক কথা উঠত। তাই শুধু বাবা-মাকেই ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন, জানান শ্রেয়সী। পেশায় শিক্ষক, বাবা বিধানচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “মেয়ে তার ইচ্ছার কথা বলার পরে, প্রথমে একটু দ্বিধা থাকলেও মত দিয়েছি। নিজে সেলুনে নিয়ে গিয়ে চুল কাটিয়ে এনে পোস্টও করেছি।” গর্বিত শ্রেয়সীর মা অর্চনাদেবী জানান, এ ভাবে ক্যানসার আক্রান্তদের কথা ক’জন ভাবতে পারে। শ্রেয়সীর এক প্রতিবেশীর কথায়, “ছোট চুলে দেখে খটকা লেগেছিল। তবে কারণ জানতে পেরে গর্ব হচ্ছে।” আর শুধু এক বার নয়। ‘‘চুল বড় হলে আবারও দান করব’’, বলেন শ্রেয়সী।
শ্রেয়সীর কাজের প্রশংসা করে বিডিও (পাত্রসায়র) নিবিড় মণ্ডল বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা এ ভাবে সামাজিক কাজে এগিয়ে এলে, আখেরে সমাজেরই মঙ্গল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy