—প্রতীকী চিত্র।
পদ থেকে অব্যাহতি চাইলেন খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী।সূত্রের খবর, কেন তিনি পদ থেকে সরতে চাইছেন, তার কারণ ব্যাখ্যা করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্লক সভাপতি চিঠি দিয়েছে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, কমিটির সদস্যেরা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে।
বিকাশ রায়চৌধুরী পারিবারিক একটি দুর্ঘটনার কারণে জেলার বাইরে। শুক্রবার তিনি ফোনে বলেন, ‘‘এমন কোনও চিঠি খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি দিয়েছেন বলে জানি না। খোঁজ নেব।’’ যদিও কাঞ্চন অধিকারী পদত্যাগপত্র দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যে ব্লক সভাপতি হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই দায়িত্বে থেকে অব্যাহতি চেয়েছি।’’ পরিস্থিতি কোন জায়গায় পৌঁছেছিল, তা ব্যাখ্যা করতে চাননি কাঞ্চন। তবে, দলের ‘কোন্দলের’ জেরেই তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছেন বলে কাঞ্চন-অনুগামীদের দাবি। তৃণমূলের সূত্রে জানা যাচ্ছে, আলোচনা সাপেক্ষে পদত্যাগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদল খয়রাশোলে নিজেদের ‘হারানো জমি’র অনেকটা পুনরুদ্ধার করতে পারলেও ‘দ্বন্দ্বে’র ছবিতে বদল আসেনি বলেই অভিযোগ। যে ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকট হয়েছিল, গত মার্চে কলকাতার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই। ব্লকের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী নাকি ব্লকের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত ঘোষের অনুগামীদের, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র বিবাদ তৈরি হয়েছিল। ৭ জন অঞ্চল সভাপতি ব্লক সভাপতির বিপক্ষে চলে গিয়েছিলেন। একটা সুদীপ্তকে পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়েও দেন মমতা। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে সেই বিবাদ মেটানোর চেষ্টা হলেও পঞ্চায়েতে প্রার্থী নির্বাচন, মনোনয়ন জমা দেওয়া এবং ফল প্রকাশের পরে দলের নির্দেশ না-মেনে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী গঠনেও ‘দ্বন্দ্ব’ সামনে এসেছে।
খয়রাশোল তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর ‘আস্থাভাজন’ কাঞ্চনের কোথাও একটা ‘জোর’ ছিল। কিন্তু, তৃতীয় বারের জন্য জেলা সভাধিপতি পদে বিকাশের নাম দল আর না-ভাবার পরেই কাঞ্চনের বিপক্ষ গোষ্ঠীর প্রভাব বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, ব্লক সভাপতির ‘ঘনিষ্ঠ’দের কয়েক জনও বিপক্ষ শিবিরে যোগ দেন। দলের সমীকরণে ইদানীং ‘কোণঠাসা’ হয়েছিলেন কাঞ্চন বলেও সূত্রের দাবি। তার পরেই তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।
সূত্রের খবর, পদত্যাগপত্রে কাঞ্চন লিখেছেন, যে ব্লক এক সময় ‘খুনখারাপি’, ‘রাহাজানি’ ও ‘দাদাগিরি’র জন্য চর্চায় ছিল, তা শুধরে গিয়েছিল তিনি সভাপতি থাকাকালীন। তার ফল পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু, তৃণমূলের ‘নামধারী’, যে-সব ‘স্বার্থেন্বেষী, সুবিধাবাদী, প্রবঞ্চক’ কর্মীদের জন্য এলাকার মানুষ শাসকদলের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন, তাঁরাই দলে প্রাধান্য পাচ্ছেন। দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রাধন নির্বাচন হয়েছে। জেলা ও রাজ্যকে জানিয়েও ফল মেলেনি।
কাঞ্চনের বিপক্ষ গোষ্ঠীর একাধিক নেতা বলেন, ‘‘পদত্যাগপত্রে কী লিখেছেন, সেটা তিনি জানেন। তবে, তিনি যদি এতই ভাল কাজ করে থাকেন, তা হলে সকলের থেকে দূরে সরে গেলেন কী করে! দল অনুসন্ধান করলেই সত্যিটা জানতে পারবে।’’ জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে খয়রাশোলের এই দ্বন্দ্ব মেটানো প্রয়োজন। ব্লক সভাপতির পদত্যাগ গৃহীত হলে আপাতত হয়তো একটি কমিটি গড়ে ব্লকের দায়িত্বে
দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy