Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
purulia

আবাস-ক্ষোভের প্রভাব কি ভোটে, চর্চা শুরু তৃণমূলে

 ঘটনা হল, ২০১৮-য় তৈরি হওয়া ওই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা ধরে প্রাথমিক সমীক্ষার পরে সেই তালিকা পঞ্চায়েতের গ্রাম সভার বৈঠকে এসেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪২
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের আবাস প্লাসের তালিকা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। বিরোধী দল নয়, গ্রামে গ্রামে দলমত নির্বিশেষে অভিযোগে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিক্ষোভ আছড়ে পড়েছে ব্লক সদরে। পথ অবরোধ শুরু করে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে ব্লক প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিককেও। ক্ষোভের আঁচ প্রভাব ফেলবে না তো আগামী পঞ্চায়েত ভোটে, জোর চর্চা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরেই।

ঘটনা হল, ২০১৮-য় তৈরি হওয়া ওই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা ধরে প্রাথমিক সমীক্ষার পরে সেই তালিকা পঞ্চায়েতের গ্রাম সভার বৈঠকে এসেছে। তার আগে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে তালিকা ধরে খতিয়ে দেখেছেন কারা উপভোক্তার তালিকায় থাকার যোগ্য। সমান্তরাল ভাবে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও তালিকা খতিয়ে দেখেছেন। প্রাথমিক সমীক্ষার ভিত্তিতে উঠে আসা তালিকা এসেছে গ্রাম সভার বৈঠকে। প্রকল্পের বিধি অনুযায়ী গ্রাম সংসদ তালিকায় অনুমোদন দিলে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা।

গত বৃহস্পতিবার জেলার বেশির ভাগ পঞ্চায়েতে গ্রাম সভার বৈঠকে অনুমোদনের জন্য তালিকা আনা হয়। কিন্তু তালিকা পাঠ শুরু হতেই প্রতিবাদে সরব হতে দেখা যায় বিভিন্ন গ্রাম সভার বৈঠকে হাজির মানুষজনকে। কোথাও তুমুল বিক্ষোভে তালিকা পাঠের কাজ শেষ করে যায়নি। সঙ্গে রাজ্য সড়ক-সহ বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ পঞ্চায়েতের কর্মীদের আটকে রাখা, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। বান্দোয়ান থেকে পুরুলিয়া, হুড়া থেকে ঝালদা, সর্বত্রই যোগ্যদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুনরায় সমীক্ষা করার দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা।

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, তালিকা তৈরিতে কেন্দ্রের কড়া বিধি-নিষেধের ফাঁসেই যে অনেককে বাদ পড়তে হয়েছে, এই কথা মানুষজনকে বোঝাতে স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ নিচুতলায় শুরু হলেও আখেরে যে কতটা কাজ হবে, ধন্দে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই। পাশাপাশি, দলের নিচুতলায় অনেক নেতার ঘনিষ্ঠ কিছু নাম প্রাথমিক সমীক্ষার পরেও তালিকায় থেকে যাওয়ার অভিযোগ ঘিরেও অস্বস্তি বেড়েছে। প্রশাসনিক ভাবে তালিকা তৈরি হলেও তাই অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না শাসকদলের জনপ্রতিনিধি থেকে নেতা-কর্মীরা।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানছেন, তালিকা নিয়ে মানুষের একাংশে যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে, তা সহজে মিটবে না। তাঁর কথায়, “দিল্লি এই প্রকল্পে দীর্ঘদিন টাকা আটকে রেখেছিল। তার পরে যদিও বা টাকা দিয়েছে, সঙ্গে ১৫ দফা এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে যে, তা মেনে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করা হলে বেশির ভাগই তালিকা থেকে বাদ পড়বেন। কেবলমাত্র যাযাবরেরাই যোগ্য বলে হয়তো বিবেচিতহবেন। আমার প্রস্তাব, যা যা বিধি-নিষেধ রয়েছে, তা একটু শিথিল করা হোক।”

তাঁর সংযোজন, “নিজে বেশ কিছু গ্রাম সরজমিনে ঘুরে দেখেছি। কোনও গরিবের হয়তো তাঁর ঠাকুরদার আমলের একটি জীর্ণ পাকা বাড়ি রয়েছে, যা বসবাসের যোগ্য নয়। কোনও রকমে লোকজন মাথা গুঁজে বাস করেন। কিন্তু প্রকল্পের বিধি মানলে ওই বাড়ির বাসিন্দারা তালিকায় থাকার যোগ্য নন।”

যদিও গ্রামে গ্রামে গরিবেরাই মূলত মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলছেন। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “যাঁরা মনে করছেন তালিকায় ঠাঁই পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান। প্রশাসন তা খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজনে আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাব, যাতে তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত করা যায়।”

অন্য বিষয়গুলি:

purulia TMC Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy