পুরভোটে জেলাজুড়ে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় টহলদারি বাড়াল জেলা পুলিশ। জেলার চার শহরের বাইরের বিভিন্ন রাস্তায় চলছে চেকিং। চলছে ধরপাকড়ও। জেলায় স্পর্শকাতর বুথগুলি চিহ্নিত করে, এালাকায় এলাকায় শুরু হয়েছে নজরদারি।
জেলা সদর সিউড়িতে ৬৪টি বুথের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বুথকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ-প্রশাসন। যার মধ্যে ১৫, ৩, ১৬, ১৭, ১১, ৫-এর মতো বুথগুলিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে খবর। সব দিক ভেবেই আলাদা করে নজর রাখা হবে বুথগুলিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোটের দিন সাঁইথিয়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় গণ্ডগোল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই সতর্কতা হিসাবে পুলিশ আগাম ব্যবস্থা হিসাবে কয়েকদিন আগে থেকেই শহরের বাইরে বিভিন্ন রাস্তা-সহ এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরজুড়ে রুটমার্চ করেছে তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২, ৩, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের আগের রাত্রি থেকেই গণ্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা আছে। এই সব ওয়ার্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়ায় ও বুথে অশান্তি হতে পারে। শহরের ১৬টি ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ৪১। পুলিশের তরফে এই ৪১টি বুথের মধ্যে ১৭টি বুথকে অতি স্পর্শকাতর ও ১২টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ১২টি বুথকে স্বাভাবিক বলা হয়েছে।
জেলার অন্য শহরেও নির্বিঘ্নে ভোট করাতে মাঠে নেমেছে তারা, বলে জেলা পুলিশের দাবি। প্রশাসন সূত্রের খবর, রামপুরহাটের ১, ৫, ৮, ১৫, ১৬, ১৭ এই ওয়ার্ডগুলি-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়ায় গণ্ডগোলের আশঙ্কা রয়েছে। মোট ৫২টি বুথের মধ্যে ১৩টি অতি স্পর্শকাতর, বাকি বুথগুলিকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শহরের বাইরে চলছে চেকিং এর পুলিশি টহলদারিও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ভোটের দিন গণ্ডগোলের আশঙ্কা রয়েছে বোলপুরেরও। শহরের ৬৯টি বুথের মধ্যে ২৯টি বুথ অতি স্পর্শকাতর ও ২১টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি বুথগুলি স্বাভাবিক বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
ঘটনা হল, পুলিশ প্রশাসন যায় বলুক না কেন, বিরোধী দলগুলির পক্ষে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ যায় বলুক বাস্তবে সাঁইথিয়ার সবকটি বুথই স্পর্শকাতর। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে রাজ্য ও জেলা নির্বাচন কমিশনারের কাছে সাঁইথিয়ার ৪১টি বুথেই গণ্ডগোলের আশঙ্কা রয়েছে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, ‘‘সাঁইথিয়ার বুথ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও বাস্তবে চারটি পুর এলাকার সব বুথই অতি স্পর্শকাতর।’’
বিজেপি-র জেলা সভাপতি অর্জুন সাহাও একই দাবি করেছেন। তিনি প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করারও দাবি জানিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সম্পাদক দেবাশিস সাহা বলেন, ‘‘এই জেলায় কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। ওই দলগুলি নানাভাবে গণ্ডগোল পাকাতে চাইছে। আমরা চাই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। আশাকরি প্রশাসনও এ ব্যপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’
ঘটনা হল, ভোট করতে গেলে যে পরিমাণ পুলিশের দরকার, এই মুহূর্তে তার সিকিভাগও নেই থানাগুলিতে। জেলায় বাহিনীতো দূরের কথা, এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত পুলিশই দেওয়া হয়নি থানাগুলিকে। পুলিশ কর্মীদের একাংশের দাবি, অল্প সংখ্যক পুলিশ নিয়েই চলছে চেকিং থেকে নির্বাচনের, পুর শহরগুলিতে রুটমার্চ।
এই অল্প সংখ্যক পুলিশ দিয়ে এই জেলায় কী ভাবে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানো যাবে, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy