কানে তালা লাগল দর্শকদের। কান ঢেকেছে পুলিশও। নিজস্ব চিত্র
এ বছরও কালীপুজোর ভাসানে পিলে চমকে উঠল বাঁকুড়ার সোনামুখীর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল শোভাযাত্রা। শুক্রবার বিকেলেও দশেরবাঁধে চলেছে বিসর্জন। প্রকাশ্যেই ফেটেছে শব্দবাজি। কানে আঙুল চাপা দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের। তবে থানা থেকে দাবি করা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ ভাবেই সব কিছু মিটেছে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য কেউ গ্রেফতার হয়নি। প্রতি বছর কালীপুজোর আগে সোনামুখীতে পুলিশের পক্ষ থেকে আগের বারের সেরা পুজোগুলিকে পুরস্কৃত করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ বার সবটাই লক্ষ করা হয়েছে। আগামী বছর পুরস্কার দেওয়ার আগে শব্দবাজি আর ডিজে-র বিষয়টি সব থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।
সোনামুখীতে ১৯টি কালীপুজো বড় করে হয়। চার দিনের পুজো। তার পরে বিসর্জন। এ বার বিসর্জনের দিনটা ছিল বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৮টা ৫ মিনিট থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। চলেছে ভোর ৩টে ২৫ মিনিট পর্যন্ত। এই শহরের অনেক পাড়ারই নাম দেবীর নাম অনুসারে। যেমন বড়কালীতলা, রক্ষাকালীতলা। পাড়া থেকে শোভাযাত্রা করে ১৯টি পুজো কমিটি প্রতিমা নিয়ে গিয়েছিল চৌমাথায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাজির প্রদর্শনী সেরে আবার বেরিয়ে পড়েছে। অন্য এলাকাগুলি ঘুরে আবার ফিরে গিয়েছে পাড়ায়।
চৌমাথার প্রদর্শনীতে এ বারও দেদার শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় অনেক মানুষজন।
ফাটছে কদমঝাড়। বৃহস্পতিবার রাতে সোনামুখীর চৌমাথায়। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই সোনামুখীর রথীননগর, মাইতোকালীতলা, দেওয়ান বাজারের মতো শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন রাস্তায় নেমেছিলেন। শহরের পথে নেমেছিল মানিকবাজার, কোচডি, পাথরমোড়া, রামপুর, মাস্টারডাঙা, নফরডাঙার মতো লাগোয়া বিভিন্ন এলাকার মানুষের ঢল। ম্যারাপ বেঁধে তৈরি ছিল পুলিশ ও প্রশাসন। খোলা হয়েছিল কন্ট্রোলরুম। সন্ধ্যা থেকে সেখানে জেলা পুলিশের কর্তাদের দেখা গিয়েছে।
তার পরেও, শহরের এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, ‘‘কালীপুজোর দিন থেকে শহরে বিকট শব্দের বাজি কমই ছিল। কিন্তু বিসর্জনে সব বাঁধ ভেঙে গেল।’’ বিসর্জনের সময়ে ঢাক--তাসার শব্দ ছাপিয়ে চৌমাথা বারে বারে কেঁপে উঠেছে ‘আসমান গোলা’, ‘বেলবোমা’, ‘কদমঝাড়’-এর শব্দে।
দুর্গাপুর থেকে বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে সপরিবার সোনামুখী এসেছিলেন গৌতম বসু। বৃহস্পতিবার রাতে চৌমাথায় দু’কান চেপে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সবার নাকের ডগায় এ ভাবে শব্দবাজি ফাটছে! পুজোর উদ্যোক্তারা কবে সচেতন হবেন?’’ সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় কালী বিসর্জন সমন্বয় কমিটির সভাপতি। এই ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘হাতের পাঁচটা আঙুল তো সমান হয় না। একেবারে না হলেও, শব্দবাজি অনেকটাই কমেছে।’’ তিনি জানান, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কালী পুজোর আগে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। আইনের কথা বলে সতর্ক করা হয়েছে, অনুরোধ করা হয়েছে—যাতে শব্দবাজি বা ডিজের উপদ্রব না হয়। সুরজিৎবাবুর কথায়, ‘‘আশা করা যায়, ভবিষ্যতে সোনামুখী আরও সচেতন হবে নতুন প্রজন্ম আর প্রবীণ মানুষজনের কথা ভেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy