—ফাইল চিত্র।
নিজের জেলা বাঁকুড়ায় সাংসদ সৌমিত্র খাঁর ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কয়েকটি ফৌজদারি মামলার জেরে বিজেপির বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌমিত্রকে বাঁকুড়ায় ঢুকতে বারণ করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার ওই বেঞ্চ সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
আদালতের নির্দেশ শুনে সৌমিত্র বলেন, ‘‘রবিবারই জেলায় ঢুকছি। প্রায় সাড়ে সাত মাসের বেশি সময় ধরে আমি জেলা-ছাড়া। জীবনে দশ দিনের বেশি কখনও আমি বাড়ির বাইরে থাকিনি।’’ তিনি জানান, ভোটে জেতার পরে এই প্রথম বিষ্ণুপুরে যাবেন। রবিবার প্রথমেই তিনি বিষ্ণুপুরের ডিহরের যাঁড়েশ্বর মন্দিরে গিয়ে পুজো দেবেন। তারপরে বিষ্ণুপুরে ধন্যবাদজ্ঞাপনের সভা করবেন। বিকেলে গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে তাঁর বাড়ি যাওয়ার কথা।
গত জানুয়ারি মাসের গোড়ায় ফেসবুকে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করায় দল তাঁর উপরে রুষ্ট হয়। তখন তিনি তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। তারপরেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বহিষ্কৃত হন তৃণমূল থেকে। এরপরেই সৌমিত্রর বিরুদ্ধে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা দায়ের হয়।
সৌমিত্রের আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত জানান, স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া, অবৈধ ভাবে বালিখাদান চালানো, বেআইনি অস্ত্র রাখা, সাংসদ কোটার টাকা তছরুপের মতো অভিযোগ দায়ের হয়েছে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন থানায়। চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, সৌমিত্রকে গ্রেফতার না করতে। বাকি তিনটি মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন সৌমিত্র। তিনি যাতে ওই সব মামলার তদন্তে প্রভাব খাটাতে না পারেন, সেই কারণে বাঁকুড়া জেলায় ঢুকতে নিষেধ করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ।
তবে বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনে জিতে সৌমিত্র ওই কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান। আবেদনে তিনি জানান, তিনি সাংসদ। তাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। সাংসদ কোটার টাকায় জনগণের জন্য তিনি কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে চান। সেই কারণেই তাঁর বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে ঢোকা জরুরি।
ওই মামলার শুনানিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী একটি রিপোর্ট পেশ করে দাবি করেন, সৌমিত্র বিরুদ্ধে সাক্ষীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। যদিও সৌমিত্রর আইনজীবী আদালতে পাল্টা দাবি করেন, তাঁর মক্কেল ভয় দেখাচ্ছেন, রিপোর্টে তেমন কথা বলা নেই।
নিষেধাজ্ঞা থাকার জন্য সৌমিত্র জেলায় ভোটের প্রচারে আসতে পারেননি। তাঁর হয়েই প্রচার চালান স্ত্রী সুজাতা খাঁ। তবে, নিষেধাজ্ঞা-পর্বে দু’বার বাঁকুড়ায় এসেছিলেন সৌমিত্র। প্রথমে এক বার লোকসভা ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা করতে সু্প্রিম কোর্টের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়ে এসেছিলেন। পরে, গত সোমবার, একটি মামলার জন্য এসেছিলেন বিষ্ণুপুর আদালতে। সে বার নিম্ন আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘সৌমিত্র জেলায় ঢোকার ছাড়পত্র পাওয়ায় আমরা খুশি। সাড়ম্বরে তাঁকে আমরা বরণ করব।’’ তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘অন্য দলের কে জেলায় আসছে, কি আসছে না, তা নিয়ে আমরা ভাবিত নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy