সৌমিত্র খাঁকে পাল্টা জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দেখা করে যাবতীয় তথ্য দিয়ে এসেছেন কুণাল ঘোষ। সেই তথ্যই এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে পৌঁছে গিয়েছে। শুধু তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণালই নন, তাঁর দলের অনেকেই গোপনে তথ্য দিয়ে চলেছেন। সম্প্রতি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ‘দুর্নীতি’, গরু ও কয়লাপাচার-সহ একাধিক মামলায় নেতাদের নাম জড়িয়ে যাওয়া এবং তাঁদেরকে ইডি-সিবিআইয়ের তলব ঘিরে শাসকদদলে অস্বস্তির আবহে এমন দাবি করলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যদিও সৌমিত্রের এই দাবিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘এ সব রাজনীতির ক্লাস ওয়ান-টুয়ের খেলা। যাঁকে ভয় পায় লোকে, তাঁকে ঘিরে কনফিউশন (বিভ্রান্তি) তৈরি করা।’’
সোমবার স্বাধীনতা দিবসের উদ্যাপনে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বৈলাপাড়ার দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিতে অংশ নেন সৌমিত্র। কর্মসূচির পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কেলেঙ্কারি’র অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে সরষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। কুণাল যখন জেলে ছিলেন, তখন তৃণমূলের অনেক নেতা আনন্দ করেছিলেন। কিছু দিন আগেই ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কুণাল। এর পর যেখানে যা তথ্য পৌঁছে দেওয়ার, তিনি তা পৌঁছে দিয়েছেন। ইডি-সিবিআই পর্যন্ত তথ্য পৌঁছে দিয়েছেন উনি।’’ সৌমিত্রের সংযোজন, ‘‘শুধু কুণাল ঘোষই নন, তৃণমূল ডান হাত বাঁ হাত যাঁরা আছেন, তাঁরাও নিয়মিত তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টাকা কোথায় আছে, সে তথ্য তাঁরাই দিচ্ছেন।’’
সৌমিত্রের এই দাবির প্রেক্ষিতে কুণাল বলেন, ‘‘ওঁর কথা যদি সিরিয়াসলি নিতে হয়, তা হলে তো সার্কাসের জোকারদেরও সিরিয়াসলি নিতে হবে। এ সব রাজনীতির ক্লাস ওয়ান-টুয়ের খেলা। যাঁকে ভয় পায় লোকে, তাঁকে ঘিরে কনফিউশন (বিভ্রান্তি) তৈরি করা। এ সব ছোটবেলায় পড়ে এসেছি।’’
বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রকে ‘লক্ষ্মীছাড়া’ বলেও কটাক্ষ করেন কুণাল। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি করা যায় না, সৌমিত্রের সঙ্গে থাকা যায় না বলেই তো ওঁর স্ত্রী (সুজাতা মণ্ডল) তৃণমূলে চলে এসেছেন। তখন সৌমিত্র বলেছিল, আমার লক্ষ্মী চলে গেল। যাঁর লক্ষ্মী চলে গেল, তাঁকে তো এমনিই লক্ষ্মীছাড়া বলে। তাঁর কথার আবার কী উত্তর দেব! ওঁর যদি কিছু বলার থাকে, যা আছে পাঠিয়ে দিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তার পরেও দেখা যাবে, সামনের সারিতে দাঁড়িতে ওঁদের গুষ্টির ষষ্ঠীপুজো আমিই করছি।’’
বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ করে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার দাবি, তৃণমূলে আসার জন্য দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন সৌমিত্র। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ কী বলেছেন, সেই ব্যাপারে আমি অবগত নই। সাংসদ তৃণমূলে আসতে চাইছেন। সে জন্য তিনি নিয়মিত আমাদের দলের অনেক নেতা-নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।’’
শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের গ্রেফতারি নিয়ে শোরগোলের আবহে গত মাসে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে কুণালের সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই ঘটনায় বিজেপির অন্দরে ‘বিড়ম্বনা’ তৈরি হয়েছিল। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, কলকাতায় সুকিয়া স্ট্রিটে যে বিজেপিকর্মীর বাড়িতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসেছিলেন, সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন না কুণাল। তা সত্ত্বেও কাউকে না জানিয়ে সেই বাড়িতে চলে এসেছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে ওই আবাসনে কুণালও থাকেন। পরে কুণাল বলেছিলেন, ‘‘দরজার সামনে দাঁড়ানো বিজেপির কয়েক জন আমায় ঘরে ডেকে নিয়েছিলেন। সৌজন্যেও ভূত দেখছে বিজেপি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কুণালের মধ্যে সাক্ষাতে সেই সময় রাজনৈতিক মহলে বিস্তর প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। সেই বিতর্ককেই আবার টেনে তুলে আনলেন সৌমিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy