দূরত্ব: ব্যারিকেডের বাইরে থেকে খাবার রেখে যাচ্ছেন আত্মীয়েরা। শনিবার পুরুলিয়া শহরের ভুঁইয়াপাড়ায়। ছবি: সুজিত মাহাতো
‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ থেকে বেরিয়ে কেউ কাজে যেতে পারছেন না। কারও খাবার রাখা থাকছে গলির বাইরে। কিন্তু বাইরে ‘বাফার জ়োন’-এ যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অনেকে এখনও ‘মাস্ক’ পরার ব্যাপারে সচেতন নয়। এমনটাই দেখা গেল শনিবার পুরুলিয়া শহরে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘আমরা দেখছি, যাতে কনটেনমেন্ট জোন থেকে কেউ বাইরে না যান। মাস্ক না পরার বিষয়টি মহকুমাশাসককে দেখতে বলা হবে।’’
পুরুলিয়া শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভুঁইয়াপাড়ার একটি গলি ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে চার-পাঁচটি পরিবারের বসবাস। একটি বাড়িতে বৃদ্ধ দম্পতি থাকেন। তাঁদের বড় ছেলে বলেন, ‘‘আমার বাড়ি এই পাড়াতেই। বাবা-মা আর ভাই বেরোতে পারছেন না। রান্না করে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।’’ ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন তিনি। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘এখানে যদিও একটা কাজ জুটেছিল, আমাদের পাড়া কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় পড়ায় এখন যেতে পারছি না।’’ তিনি জানান, পুরসভা থেকে চাল, ডাল, তেল, ছাতু, বিস্কুট দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আড়াই মাসের শিশুসন্তান রয়েছে তাঁদের। তাকে নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন।
মাঝেমাঝে পুলিশ কর্মীরা টহল দিয়ে যাচ্ছেন। ব্যারিকেডের বাইরে পালা করে দিন-রাত মোতায়েন রয়েছেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁদের দাবি, সবাই নিয়ম মানছেন। কিন্তু জ়োন-ভিত্তিক ‘লকডাউন’-এর তৃতীয় দিনেও ওই গলির বাইরে ‘মাস্ক’ ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে অনেককে। রাস্তায় ‘মাস্ক’ ছাড়া খেলাধুলো করছে ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা। এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক-মুখ চাপলেন দুই মহিলা। তখন দুপুর ১২টা। এক জন বললেন, ‘‘সব সময় মাস্ক পরে থাকা যাচ্ছে না।’’
বাঘমুণ্ডির তুন্তুড়ি-সুইসা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে দু’টি ‘কন্টেনমেন্ট’ জ়োন রয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি, সেখানকার বাসিন্দারাও ঘরবন্দি মানুষজনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। গ্রামে ছোট একটি মুদির দোকান রয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যা প্রভাতী মাহাতোর। তিনি বলেন, ‘‘যতটা সাহায্য করা যায়, তা দেখতে বলেছে প্রশাসন। কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাড়িগুলির কোনও জিনিসের দরকার হলে পৌঁছে দিচ্ছি। ছোঁয়াচ এড়াতে এখন টাকা নিচ্ছি না। পরে নিয়ে নেওয়া যাবে।’’
রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বড়রা পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে এক সঙ্গে ছ’জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। পাড়াটিকে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ করা হয়েছে। ৬৫টি পরিবারকে শনিবার দুপুরে চাল ও ডাল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও মৃণ্ময় মণ্ডল। তবে ঘরবন্দি কিছু পরিবারের দাবি, কিছু বেশি পরিমাণে খাবার পেলে সুবিধা হত। তাঁদের দাবি, গ্রামের দু’টি মুদির দোকান থেকে যাবতীয় জিনিস কিনতেন। এখন সে দু’টি বন্ধ। ফলে, সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চাল, ডাল, আলু, আটা আর শিশুদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ছোটখাট সব প্রয়োজন মেটানো সমস্যার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy