সরেজমিন। নিজস্ব চিত্র
ডাম্পারের ধাক্কায় মা ও মেয়ের মৃত্যুর পরেই রঘুনাথপুর শহরে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রবিবার সকালের সেই দুর্ঘটনার পরে, সোমবার দুপুরে সরেজমিন পরিস্থিতি দেখতে পথে নামল পুলিশ ও প্রশাসন।
এ দিন বেলা ১টা নাগাদ চৌমাথার মোড়ে দুর্ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় ও এসডিও (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। সঙ্গে ছিলেন পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়, পূর্ত দফতরের রঘুনাথপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অজয় ভট্টাচার্য, রঘুনাথপুর থানার আইসি সন্দীপ চট্টরাজ। ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবি ও পরামর্শ শোনেন এসডিও। পরে তিনি বলেন, ‘‘চৌমাথার মোড়ের সবক’টি রাস্তাতেই স্পিড ব্রেকার তৈরি করার জন্য পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে। ট্র্যাফিক সিগন্যালের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন এসডিপিও।”
রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ রঘুনাথপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌমাথার মোড়ে ক্ষুদিরাম পার্কের কাছেই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানার জোশাইডি গ্রামের বনলতা মুখোপাধ্যায় ও তাঁর বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়ে পিঙ্কি মুখোপাধ্যায়ের। ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় ডাম্পারটিতে। যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে অবরোধও হয়। ওই সিগন্যাল ব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকার বেশ কিছু লোকজনের। তাঁদের দাবি, যান নিয়ন্ত্রণের কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বদলে প্রশিক্ষিত পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা দরকার। সোমবার দেখা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে পুলিশ কর্মীরাও চৌমাথার মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণ করছেন।
শহরের মধ্যে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ-সহ বেশ কিছু দাবিতে সোমবার বিকেলে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয় রঘুনাথপুর নাগরিক মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনের কর্মকর্তা কৌশিক সরকারের অভিযোগ, রবিবারের দুর্ঘটনার জন্য অনেকটাই দায়ী সিগন্যাল ব্যবস্থার গলদ। ট্র্যাফিক সিগন্যালে কিছু ক্ষেত্রে ত্রুটি যে রয়েছে, সে কথা কার্যত মেনে নিয়েছে পুলিশও। স্থানীয়দের লোকজনের অভিযোগ, যেখানে ট্র্যাফিক সিগন্যাল বসানো হয়েছে সেটা রাস্তার সব জায়গা থেকে নজরে পড়ে না। সিগন্যাল লাল থাকলেও অনেকেই গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন।
এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ সুপারে সঙ্গে কথা বলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে ট্র্যাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থায় কিছু পরিমার্জন করার কথা ভাবা হচ্ছে।” পাশাপাশি, শহরের মধ্যে গাড়িগুলি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ ও পণ্যবাহী ভারী গাড়ির শহরে ঢোকার ব্যাপারে নির্দিষ্ট একটা সময় বেঁধে দেওয়ার দাবি উঠেছে। এসডিও জানান, এই বিষয়গুলি চালু করতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।
থানা, পুরসভা ও আদালত থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, চৌমাথার মোড়ের পাশে গাড়ি ও মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে রাস্তা যে আরও সরু হয়ে যাচ্ছে, পরিদর্শনে গিয়ে সেটাও নজরে এসেছে পুলিশ ও প্রশাসনের। এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য পুরসভা ও পুলিশকে বলেছেন এসডিও। দুর্ঘটনার পরেই এলাকায় পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কিছু বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে সুরজিৎ শান্তিকারী বলেন, ‘‘আধিকারিকেরা বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা চাই, সেগুলি দ্রুত হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy