শুকিয়ে গিয়েছে খাল। বিষ্ণুপুরের রাসতলায় শ্যামরাই মন্দিরের পাশে। নিজস্ব চিত্র ।
গ্রীষ্ম পড়ার আগেই জলাভাব দেখা দিয়েছে পুরুলিয়া শহরে। শহরের একাধিক ওয়ার্ড থেকে অভিযোগ উঠেছে— পাড়ার টাইমকলে নিয়মিত জল মিলছে না। এমন অভিযোগও উঠেছে, কোনও কোনও এলাকায় টানা তিন-চার দিন জল আসেনি। পুরসভা থেকে বাড়ি-বাড়ি পানীয় জলের যে সংযোগ দেওয়া হয়েছিল, তেমন কিছু এলাকাও জল-বঞ্চিত বলে অভিযোগ। পুরুলিয়ার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন উপপুরপ্রধান বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘কংসাবতী নদী একেবারেই শুকিয়ে গিয়েছে। তার জেরে নদীর নীচে জলের ভাণ্ডারে টান পড়েছে। বাড়ির সংযোগে সরবরাহ কমিয়ে পাড়ার টাইমকলে সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে।’’
পানীয় জলের দাবি নিয়ে পুরুলিয়া শহরবাসীর পথে নামার ঘটনা চলতি বছরে প্রথম নজরে আসে ভোটের আগে। জল না পাওয়ার অভিযোগে অবরোধ করা হয় পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়ক ও পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক। শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কর্পূরবাগান ও দেশবন্ধুরোড এলাকার কিছু বাসিন্দা হাঁড়ি-কলসি, বালতি নিয়ে অবরোধে নামেন। জলের গাড়ি পাঠিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া গেলেও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের শেষের দিকে শহরের একাধিক ওয়ার্ড থেকে একই অভিযোগ পুরসভার কাছে আসতে শুরু করেছে।
শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিমটাঁড়, নিউ কলোনি, শেখ বেচু বাইলেন, নিমটাঁড় বহালবস্তি, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎ সেন কম্পাউন্ড, লোকনাথপল্লি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নীলকুঠিডাঙা, সিন্দারপট্টি, নেতাজি আবাসন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আমডিহা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকেই পানীয় জল না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি— কোথাও টাইমকলে জল যদি বা আসে, সময়ের ঠিক নেই।
আমডিহা এলাকার এক বধূর কথায়, ‘‘পাড়ার কলে আগে নিয়ম করে বিকেলে জল দিত। গত ক’দিন ধরে জল অনিয়মিত আসছে। সময়ের কোনও ঠিক নেই। কতক্ষণ কলের দিকে তাকিয়ে বসে থাকা যায়?’’ নিমটাঁড়ের বাসিন্দা শিবু গড়াইয়ের কথায়, ‘‘আমাদের পাড়ায় চার দিন পরে, বুধবার বিকেলে জল মিলেছে।’’ নীলকুঠিডাঙা এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বাড়িতে জলের লাইন দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু তাতে জল পড়ছে না। অগত্যা পাড়ার কল থেকে জল নিয়ে বয়ে আনতে হচ্ছে।’’ কর্পূরবাগান এলাকার বধূ শম্পা গুপ্ত বলেন, ‘‘বাড়িতে জলের সংযোগ আছে, কিন্তু দু’সপ্তাহ ধরে জল আসছে না।’’
৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকা থেকেই জলের অভাবের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। গ্রীষ্ম পড়ার আগে কেন বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন অভিযোগ আসবে, তা জানতে চেয়ে আমি এমইডিকে (মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট) চিঠি দিয়েছি।’’
বর্তমানে পুর এলাকার পানীয় জল সরবরাহের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে এমইডি। এমইডি-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জল সরবরাহ ব্যবস্থায় যান্ত্রিক কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু উৎস থেকে জল না মিললে কী ভাবে স্বাভাবিক সরবরাহ চালু রাখা যাবে? দীর্ঘদিন বৃষ্টি হয়নি। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় এতদিন চালানো গিয়েছে। ভারী বৃষ্টিই একমাত্র জলসঙ্কট কাটাতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy