Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
School Dropout

School Dropouts: দুই জেলায় স্কুলছুটের হার ‘উদ্বেগজনক’, দাবি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর

শিক্ষাঙ্গন খোলা হলেও গোড়ায় স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম ছিল বলে বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা যায়।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৮:৫১
Share: Save:

জঙ্গলমহলের দুই জেলা, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় স্কুলছুটের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তাঁর দাবি, সর্বভারতীয় স্তরে সমীক্ষা চালানো একটি পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, স্কুলছুটের নিরিখে দেশের শীর্ষে থাকা জেলাগুলির অন্যতম পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া। দুই জেলার সমগ্র শিক্ষা মিশনের অবশ্য দাবি, এমন কোনও তথ্য তাদের কাছে এখনও পৌঁছয়নি।

মঙ্গলবার সুভাষবাবু জানান, শিক্ষা বিষয়ক তথ্য মজুত রাখার কেন্দ্রীয় ওই পোর্টালটি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুটের তথ্য প্রকাশ করেছে সম্প্রতি। সেখানে পুরুলিয়া জেলায় স্কুলছুট প্রায় ১৯.৫ শতাংশ ও বাঁকুড়ায় প্রায় ১৫.৭ শতাংশ বলে জানানো হয়েছে। সুভাষবাবু বলেন, “এই তথ্য বেশ উদ্বেগজনক। পড়ুয়াদের শিক্ষামুখী করতে অবিলম্বে দরকারি পদক্ষেপ করা উচিত।’’

করোনা পরিস্থিতির খানিক উন্নতির পরে, শিক্ষাঙ্গন খোলা হলেও গোড়ায় স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম ছিল বলে বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা যায়। বাঁকুড়া জেলায় নাবালিকা বিয়ের প্রবণতাও এই পর্বে বেড়ে গিয়েছে বলে ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভ’ (এনএফএইচএস)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে আসে। জেলায় কন্যাশ্রী নবীকরণের সংখ্যাও কমতে থাকে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। সামগ্রিক পরিস্থিতির বিচারে, স্কুলছুট যে বাড়তে চলেছে, সে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষকদের অনেকেই।

অনেক পড়ুয়া কেন স্কুলে আসছে না, তা জানতে শিক্ষকেরা বাড়ি-বাড়ি খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। ছাত্রদের একাংশ পড়া ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়েছেন, অনেক ছাত্রীকে নাবালিকা অবস্থাতেই বিয়ে দেওয়া হয়েছে— এমন নানা ঘটনা নজরে আসে বলে শিক্ষকদের অনেকের দাবি। বাঁকুড়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘কোভিড-পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। এর ফলেই মূলত সমস্যা হয়েছে।’’

সুভাষবাবুর অবশ্য দাবি, “শুধু অতিমারি পরিস্থিতির কথা বললে হবে না। সমগ্র শিক্ষা মিশন বা স্কুল শিক্ষা দফতরের ভূমিকা কেমন ছিল, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। এখন বহু পড়ুয়ার বাড়িতেই মোবাইল রয়েছে। শিক্ষকদের যদি দায়িত্ব দেওয়া হত, তা হলে স্কুল বন্ধ থাকলেও পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা এমন কিছু সমস্যার ব্যাপার হত না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘অতিমারি পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যে প্রকল্পগুলি রয়েছে, সেগুলি ঠিক ভাবে রূপায়ণ হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’ কী ভাবে পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরানো যায়, তা নিয়ে উপযুক্ত পরিকল্পনা তৈরির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই তথ্যের বিষয়টি না দেখে কিছু বলতে পারব না।’’ পুরুলিয়ার সমগ্র শিক্ষা মিশনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বংশীধর ওঝাও বলেন, ‘‘স্কুলছুটের এমন কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ বাঁকুড়ার সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘জেলার প্রতিটি স্কুলের সঙ্গেই সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে। যে সব এলাকায় স্কুলছুট বেশি, সেখানকার স্কুলগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।’’

‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র বাঁকুড়া জেলা সভাপতি গৌতম দাসের দাবি, “অতিমারি পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে বিপর্যয় হয়েছে। এর প্রভাব শিক্ষাক্ষেত্রেও পড়েছে। তবে মিড-ডে মিল বিলি বা পড়ুয়াদের জন্য যে প্রকল্পগুলি রয়েছে, তাতে কোনও গাফিলতি হয়নি। রাজ্য সরকার এ সবের উপরে কড়া নজরদারি রাখছে।’’ সংগঠনের পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়া জেলায় শিক্ষার হার বেড়েছে। লকডাউনের সময়ে স্কুলে যাওয়ার অভ্যাস চলে গিয়েছিল কিছু পড়ুয়ার, তা ঠিক। তবে স্কুল খুলেছে। স্কুলছুটের তথ্য আমি জানি না। সমস্যা থাকলে, তা অবশ্যই কাটিয়ে ওঠা যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

School Dropout Educaton
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy