প্রতীকী চিত্র।
আবারও নলহাটি ২ ব্লকে অন্যের অ্যাকাউন্ট ও নথি নিয়ে রূপশ্রীর টাকা তোলার অভিযোগ উঠল। ক’দিনই ধরে নলহাটি ২ ব্লকের নোয়াপাড়া গ্রামে রূপশ্রী প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে সরগরম জেলা। এ বার সেই ব্লকেরই বিরলচৌকি গ্রামের এক মহিলা দাবি করেন, তাঁকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর থেকে আধার কার্ড ও ছবি নেন পাশের গ্রাম, বাঁধখালার এক মহিলা। পাসবুক আপডেট করতে গিয়ে তা ধরা পড়তেই উদ্বেগে রয়েছেন ওই মহিলা। প্রশাসনে অভিযোগ জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বিরলচৌকি গ্রামের ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয় ওই মহিলার ভাসুর সেই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকাবেন। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় বিশ্বাস করে আধার ও ছবি দিয়ে দিয়েছি। পরে রূপশ্রী প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির কথা জানতে পেরে ব্যাঙ্কে গিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেট করলে দেখতে পাই রূপশ্রীর ২৫ হাজার টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢোকানো হয়।’’
টাকা পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা। তাঁর কথায়, ‘‘যখন দেখি সরকারি রূপশ্রীর টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢোকানো হয়েছে তখন মাথায় বাজ পড়ার মত অবস্থা। ২০০৩ সালে আমার বিয়ে হয়েছে। স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। বিড়ি বেঁধে কোনও রকমে দুই মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। আমার কাছে কোনও প্রমাণ ছিল না যে প্রশাসনের কাছে প্রমাণ করব আমি নির্দোষ। পরে একজনের কথায় টাকা নেওয়ার সমস্ত কথোপকথন ফোনে রেকর্ড করি।’’ তাঁর দাবি, ফোনে কথা বলার সময় অভিযুক্ত দাবি করেন ধান বিক্রির টাকা ঢোকানো হয়েছে। ওই মহিলার দাবি, রূপশ্রী প্রকল্পের এক টাকাও তিনি নেননি। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান তিনি।
নলহাটি ২ ব্লকে রূপশ্রীর প্রকল্পে দুর্নীতি জন্য ইতিমধ্যে আট জনের নামের মামলা রুজু করা হয়। সেই সব উপভোক্তাদের অভিযোগ, তাঁদের অজান্তে গ্রামের এক যুবক ভুল বুঝিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশাসন তদন্ত না করেই প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা দিল কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘আমরা যদি দোষী হই, তাহলে যে দালাল চক্রের আমরা শিকার হলাম তারা বুক ফুলিয়ে কী করে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অর্ধেক টাকা দালাল চক্রের সেই যুবকও নিয়েছেন।’’ নলহাটি ২ ব্লকের একাধিক গ্রামে এমন ঘটনা সামনে আসায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের অনুমান, গ্রামের দুঃস্থ মহিলাদের এই ফাঁদে ফেলে রূপশ্রীর টাকা তছরূপ করছে একটি চক্র।
নলহাটি ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেলিমা খাতুন বলেন, ‘‘সত্যি কেউ মহিলাকে ভুল বুঝিয়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন তাহলে আইনত ব্যবস্থা হবে।’’ তিনি জানান, ১৪ ও ১৫ তারিখ ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদনকারীর বাড়ি সরেজমিনে তদন্ত করবেন ব্লকের আধিকারিক ও সেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য। তারপরে রূপশ্রীর টাকা বরাদ্দ হবে। ইতিমধ্যেই সরকারি অর্থ পেতে দালাল চক্র এড়াতে প্রচারও শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy