দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাক। নিজস্ব চিত্র।
বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল গত সোমবার (৭ তারিখ)। প্রাণ গিয়েছিল আট জনের। তার পরে আরও একটি সোমবার পার হল। এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানা এলাকার গঙ্গারামচক কয়লা খনি।
বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারের সদস্যেরা এখনও শোক সামলে উঠতে পারেননি। শুরু হয়নি কয়লা উত্তোলনের কাজ। বরং বিস্ফোরণস্থলের নিরাপত্তা আরও শক্ত হয়েছে। তবে, তিন আহতের মধ্যে এক জন সিউড় সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হয়নি। এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে এমন তথ্যই মিলল।
৭ অক্টোবর রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএল পরিচালিত গঙ্গারামপুরচক খনিতে বিস্ফোরক ভর্তি ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রাণ হারান ট্রাক চালক-সহ ৮ জন। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সকলের দেহ। অধিকাংশই শ্রমিক। মৃতদের মধ্যে ৪ জন খনি লাগোয়া বাস্তবপুরের বাসিন্দা ছিলেন। ওই ঘটনায় আহত তিন জনের বাড়িও বাস্তবপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত তিন জনের এক জন, মহাদেব মারান্ডিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুবরাজপুর আদলতে ওই অভিযোগের কপি জমা পড়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, যে গাফিলতির জন্য বিস্ফোরণ ও এত জনের মৃত্যু, তার তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শান্তির দাবি করেছেন মহাদেব। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ধারা প্রয়োগ করেছে পুলিশ। যুক্ত হয়েছে বিস্ফোরণ সংক্রান্ত ধারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, লিখিত অভিযোগে মহাদেব জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ তিনি পেয়েছিলেন। ঘটনায় তিনি জখন হন, কিছুক্ষণের জন্য সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরতে দেখেন, সহকর্মীদের বেশির ভাগের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। দুবরাজপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্র কুমার দে বলেন, ‘‘গঙ্গারামচক খনিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি এফআইআর হয়েছে। তার কপি দুবরাজপুর আদালতে জমা পড়েছে। তদন্ত চলছে।’’
বাস্তবপুর গ্রামে গিয়ে জানা গেল, বিস্ফোরণে জখম খান্দু মারান্ডি সদ্য গ্রামে ফিরেছেন। তবে মহদেব ও লক্ষ্মীশ্বর হেমব্রম এখনও চিকিৎসাধীন। পরিজন জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পেলেও সরকার বা প্রশাসনের তরফে এখনও সে ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। জেলাশাসক অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, জখমদের জন্যও ক্ষতিপূরণ থাকবে।
এ দিন খনি এলাকা ছিল শুনশান। বিস্ফোরণস্থল আগেই ঘিরে ফেলা হয়েছিল। বিস্ফোরণের জেরে এতগুলি মানুষের প্রাণ গেল, কেন বিস্ফোরণ ঘটল, কোথায় ফাঁক ছিল খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক-সহ একাধিক বিশেষজ্ঞদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ আরও বাড়িয়েছে পুলিশ। অবাঞ্ছিতদের প্রবেশ রুখতে। খনিতে পুলিশ পিকেট রয়েছে। কয়লা উত্তোলন এখনও শুরু হয়নি। যে পাম্প ব্যবহার করে খনি থেকে জল তুলে ফেলা হত, সেগুলিকেও উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy