মাঠ না রাস্তা, এক ঝলকে দেখে বোঝার উপায় নেই। নলহাটির গোপালপুরের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ছবি: তন্ময় দত্ত
বেহাল ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবিলম্বে সারানোর দাবিতে ফের অবরোধ হল বীরভূমে। শনিবার সকালে নলহাটি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুরের বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এক ঘণ্টা অবরোধে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে নলহাটি থানার পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু, জাতীয় সড়কের অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ কমেনি এলাকার মানুষের।
এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের গোপালপুর থেকে কয়থা পর্যন্ত রাস্তা। নেই কোন পিচের আস্তরণ। অধিকাংশ জায়গায় পাথর বেরিয়ে এসেছে। বিপদ বাড়িয়ে রাস্তার মধ্যে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। সারা রাস্তা ধুলোয় ঢেকেছে। অবরোধকারীরা জানালেন, ধুলোর জন্য জাতীয় সড়কে নাকে রুমাল বা কাপড় চাপা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আবার কোনও সময় রাস্তার গর্ত বাঁচিয়ে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এর আগেও আমরা রাস্তা অবরোধ করেছিলাম। যতদিন রাস্তা সংস্কার না হচ্ছে ততদিন রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো ওড়া বন্ধ করতে হবে।’’
গত ১৫ নভেম্বর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এই জাতীয় সড়ক ধরেই একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। সিউড়ির সার্কিট হাউসে বসে প্রশংসার সুরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক দিব্যি ভাল,তবে রাজ্য সড়ক খুব খারাপ। সেখানে ঝটকা খেতে হয়।’’ রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে কম বিতর্ক বাধেনি। শাসকশিবির তীব্র প্রতিক্রিয়া দেয় রাজ্যপালের মন্তব্যে। তারা প্রশ্ন তোলে, জাতীয় সড়কের অবস্থা নিয়ে অবরোধ, অশান্তি, দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে জেলায়। সেই খারাপ রাস্তাও কেন নজরে পড়ল না রাজ্যপালের?
জাতীয় সড়কের হাল ঠিক কেমন, তা নিত্য টের পান গোপালপুরের বাসিন্দারাও। গ্রামের বাসিন্দা মিলন শেখ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল এই রাস্তাকে কেমন করে ভাল বললেন, তা তিনিই জানেন। আমরা তো ভুক্তভোগী। রাস্তা খারাপ থাকায় প্রচণ্ড ধুলো উড়ছে। অতিরিক্ত পাথর-বালি বোঝাই যান চলাচল করার সময় ধুলোয় রাস্তা দেখা যায় না। খাবার জিনিসেও ধুলোর আস্তরণ পড়ছে। তা পেটেও যাচ্ছে। নিশ্বাসের মাধ্যমে ধুলো শরীরে ঢুকে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।’’ আব্দুল শেখ,লাল্টু শেখ ও সালাম শেখদের ক্ষোভ, ‘‘বেহাল রাস্তার জন্য ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারছে না। প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বাদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে কষ্ট হচ্ছে। নিত্যদিন ছোটবড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য যানজট বেড়ে চলেছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করতে হবে। যতদিন না হচ্ছে ততদিন ধুলো ওড়া বন্ধ করতে রাস্তায় পাঁচ বার করে জল ছেটাতে হবে। দ্রুত রাস্তা মেরামত না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এগজিকিউটিভ নিশিকান্ত সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মি কোনও মন্তব্য করব না।’’ নলহাটির পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। কবে রাস্তা সংস্কার হবে, সে বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারেননি। জল দেওয়ার প্রসঙ্গও এড়িয়ে গিয়েছেন। আমরা নলহাটি ১ ও ২ বিডিও-র সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy