Advertisement
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
tmc

শান্তিরামকে সরিয়ে গুরুপদ

পেশায় শিক্ষক গুরুপদবাবু মানবাজারের বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর স্বামী। বর্তমানে তিনি পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা ও ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।

রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে পুরুলিয়ার জেলা সভাপতির পদ থেকেই সরিয়ে দিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব—ফাইল চিত্র

রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে পুরুলিয়ার জেলা সভাপতির পদ থেকেই সরিয়ে দিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০০:৫৮
Share: Save:

কিছু দিন আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে তাঁর নাম করে কেন তিনি ‘লকডাউন’ পর্বে সংগঠনের কাজে বাইরে বেরোননি, তা জানতে চেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকে পুরুলিয়ার জেলা সভাপতির পদ থেকেই সরিয়ে দিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁকে দেওয়া হয়েছে জেলা চেয়ারম্যানের পদ। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সামনের সারিতে তুলে আনা হয়েছে আদিবাসী প্রতিনিধি গুরুপদ টুডুকে। পেশায় শিক্ষক গুরুপদবাবু মানবাজারের বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর স্বামী। বর্তমানে তিনি পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা ও ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ।
দশ বছর আগে দলের তৎকালীন জেলা সভাপতি কে পি সিংহ দেও-কে সরিয়ে চার বারের কংগ্রেস বিধায়ক শান্তিরাম মাহাতোকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য। শুধু গত লোকসভা ভোটে জেলায় দলের বিপর্যয়ের পরে, কিছু দিনের জন্য তাঁকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। কয়েক মাস পরে তিনি দফতর ফিরে পান।
পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে পুরুলিয়ায় বিপর্যয় হলেও, পরবর্তী সময়ে শান্তিরামবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির জনপ্রতিনিধি ও কর্মী-সমর্থকেরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু নানা রকম শারীরিক সমস্যা থাকায় ডাক্তারদের পরামর্শে ‘লকডাউন’-এর কিছুটা সময়ে তিনি ‘ঘরবন্দি’ ছিলেন। তবে সেখান থেকেও সংগঠনের কাজ তিনি পুরোদমে চালিয়ে গিয়েছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। কিন্তু জেলা রাজনীতিতে ‘ঠান্ডা মাথার লোক’ বলে পরিচিত এই মানুষটিকে জেলা সভাপতির পদ থেকে যে সরানো হবে, তা দলের অনেক নেতা-কর্মীর কাছে ‘অপ্রত্যাশিত’।
আবার দলের অন্য অংশের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের ধাক্কা কাটিয়ে ভোট-ব্যাঙ্ক মজবুত করতে আদিবাসী মুখের বড় প্রয়োজন ছিল জঙ্গলমহলের এই জেলায়। বিজেপির দিকে আদিবাসী ভোট সরে যাওয়া
ঠেকাতে গুরুপদবাবুর মতো মুখ দরকার ছিল।
দল সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে জেলার স্কুলে বদলি হয়ে আসার পর থেকেই সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করছেন গুরুপদবাবু। লোকসভা ভোটে জেলার বাকি আটটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও গুরুপদবাবুর এলাকা মানবাজার কেন্দ্রে কিন্তু তৃণমূল এগিয়ে ছিল। ভোট প্রাপ্তিতে ২০১৬ সালের থেকেও ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘লিড’ বেড়েছে। যদিও দলের কর্মীদের একাংশ এ জন্য এলাকার নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক দক্ষতাকে এগিয়ে রাখছেন।
তবে দলের জেলার নেতা-কর্মীদের একাংশের আশঙ্কা, মানবাজার তথা জেলার দক্ষিণ অংশের নেতা বলে পরিচিত গুরুপদবাবুকে জেলার বাকি অংশের নেতারা মেনে নেবেন তো? গুরুপদবাবু বলছেন, ‘‘সমস্ত ব্লকেই পুরনো ও নতুন নেতা-কর্মীদের কাছে যাব। সবাইকে নিয়ে কাজ করব। পুরনোদের অভিজ্ঞতা দলের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান।’’ শান্তিরামবাবু বলছেন, ‘‘আমি দলের সৈনিক। দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করব।’’
সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সুষেণচন্দ্র মাঝি ও মিনু বাউরি— এই তিন জনকে দলের কো-অর্ডিনেটর করে তিনটি করে বিধানসভা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy