গভীরতা দেখলেন পরিদর্শকেরা। বিবড়দা পঞ্চায়েতে। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়
প্রকল্পের কাজ হয়েছে। অথচ কাজের তথ্য দেওয়া বোর্ডের দেখা নেই। কোথাও আবার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে দরকারি নথি চেয়েও পেলেন না কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার তালড্যাংরা ব্লকে একশো দিনের কাজের প্রকল্প পরিদর্শনে যাওয়া কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিনিধিদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হল জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
সোমবার সন্ধ্যায় তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল জেলায় পৌঁছয়। এ দিন বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক সেরে দলের সদস্যেরা প্রথমে তালড্যাংরার বিবড়দা পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে একাধিক একশো দিনের কাজের প্রকল্প খতিয়ে দেখেন। পরে যান তালড্যাংরা পঞ্চায়েতের কাজ পরিদর্শনে। বিবড়দা গ্রামের মাঠে বাম আমলে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে তৈরি হওয়া একটি চেকড্যামও পরিদর্শন করা হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে চেকড্যামটি সংস্কার করা হয়। সংস্কারের কাজের তথ্য সংবলিত বোর্ড থাকলেও লেখা মুছে গিয়েছে। যা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন ওঠে। পরে, বিবড়দা পুরনো বাসস্টপ লাগোয়া এলাকায় একশো দিনের কাজ প্রকল্পে হওয়া একটি বাগান পরিদর্শনে যান প্রতিনিধিরা। তবে বাগানে কোনও গাছ দেখা যায়নি। প্রকল্পের কাজের তথ্য দেওয়া বোর্ডও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে দাবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে কয়েক বছর আগে ওই প্রকল্পে কলাবাগান তৈরি হয়েছিল। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাগান বেশি দিন টেকেনি। যদিও প্রশাসনের কাছে ওই বাগান সংক্রান্ত কোনও তথ্য মেলেনি।
পরে, বিবড়দার পুরনো বাসস্টপ লাগোয়া সায়র এলাকার একটি নালার কাজ খতিয়ে দেখা হয়। বিবড়দা পঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত দুলের কাছে নালা তৈরির প্রকল্পের নথি দেখতে চাইলে সে মুহূর্তে তিনি দেখাতে পারেননি। প্রতিনিধিরা প্রধানকে দ্রুত প্রকল্পের নথি, ওই প্রকল্পের কাজ হওয়ার তথ্য সম্বলিত ছবিও প্রশাসনে জমা করতে নির্দেশ দেন। প্রধান জানান, দ্রুত ওই প্রকল্পের তথ্য ও ছবি প্রশাসনের কাছে জমা করবেন।
এর পরে, প্রতিনিধিরা হাড়ুলিয়া গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে হওয়া একটি পুকুর পরিদর্শনে যান। সেখানে গাছের ডাল ফেলে পুকুরের গভীরতা মাপা হয়। পুকুরের আয়তনেরও মাপজোক করা হয়। বিবড়দার ঠাকুরহাটি গ্রামেও এক ব্যক্তির জমিতে ভূমির উন্নতি সাধনে কাজ করা হয়েছে। সেখানেও কাজের তথ্য সংবলিত ফলক মেলেনি। বদলে একটি টিনের বোর্ড পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রধান তবে দাবি করেন, “প্রকল্পের কাজের ফলক গড়া হয়েছিল। তা মাটি ও আগাছার জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে। টিনের বোর্ডটিও ওই প্রকল্পের।”
কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা এলাকায় গেলেও স্থানীয় মানুষজন তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাননি। ঠাকুরহাটির বাসিন্দা সুকুমার লোহারের দাবি, “আমরা প্রায় তিন বছর একশো দিনের কাজ পাইনি। এখানে মেশিন লাগিয়ে কাজ করানো হয়েছিল। এ সব কথা কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের জানাব ভেবেছিলাম। কিন্তু সুযোগ পেলাম না।” প্রশাসনের এক কর্তার যদিও দাবি, বিবড়দায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে কোনও অভিযোগ পাননি।
বিডিও (তালড্যাংরা) সৌরভ মজুমদার বলেন, “তালড্যাংরা ও বিবড়দা পঞ্চায়েতের নানা এলাকায় এ দিন ঘুরেছেন প্রতিনিধিরা। একশো দিনের কাজের প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধিদের কাজের তথ্য ও নথি দেখানো হয়েছে। তার বাইরেও কয়েকটি প্রকল্পের বাড়তি কিছু নথি তাঁরা চেয়েছেন। শীঘ্রই তা নথি তাঁদের দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy