Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ration

ঘরে পড়ে বস্তা-বস্তা গম, চিন্তা

যদিও জমে থাকা গম খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

ধরেছে পোকা। বাঁকুড়ার লালবাজারের রেশনের দোকানে। নিজস্ব চিত্র

ধরেছে পোকা। বাঁকুড়ার লালবাজারের রেশনের দোকানে। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০১:১০
Share: Save:

সকালে রোদ উঠলেই গমের বস্তা নিয়ে ছাদে শুকোতে দিতে হচ্ছে। মেঘ করলেই আবার বস্তা নামাতে হচ্ছে। রেশনের বিলি না হওয়া গম নিয়ে বাঁকুড়ার অনেক ডিলারেরই এখন এমন অবস্থা।

বাঁকুড়া জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে অন্তত পাঁচ হাজার টন গম মজুত রয়েছে। ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউরদের সংগঠন জানাচ্ছে, ডিলারদের কাছে রয়েছে প্রায় ৬০০ টন গম। বাকি গম পড়ে রয়েছে ডিস্ট্রিবিউটরদের গুদামে। অত পরিমাণ গম নষ্ট গেলে বিরাট লোকসানের আশঙ্কা করছেন রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউরেরা।

যদিও জমে থাকা গম খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “গম ছ’মাস ভাল থাকে। জমে থাকা গম এপ্রিলে পাঠানো হয়েছিল। ফলে, খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এখনই নেই।” তিনি জানান, অগস্ট মাস থেকেই গম বিলি করা হবে।

কেন বিলি হয়নি?

জেলার রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরেরা জানাচ্ছেন, করোনা- পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল মাস থেকে রেশনে গম বিলি বন্ধ করে চাল বিলির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। তবে সে নির্দেশ আসার আগেই মার্চের শেষের দিকে ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে এসে গিয়েছিল গম। পুরনো নিয়মেই ডিলারদের কাছে গম বিলিও শুরু করেছিলেন ডিস্ট্রিবিউটরেরা। বিলি প্রক্রিয়ার মাঝেই গম বিলি বন্ধ রাখার নতুন নির্দেশিকা আসে জেলায়।

এর ফলে, গত তিন মাস ধরে কোনও ডিলারের ঘরে চার কুইন্টাল, কারও কাছে দেড় কুইন্টাল গম জমে রয়েছে। বর্ষায় সে গম বাঁচানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে ডিলারদের।

বাঁকুড়া শহরের লালবাজার এলাকার রেশন ডিলার পরেশ দাসের দোকানে ১ কুইন্টাল ৩০ কেজি গম জমে রয়েছে। পরেশবাবু বলেন, “গম যাতে খারাপ না হয়ে যায়, সে জন্য প্রতিদিন রোদ উঠতেই বস্তা ছাদে তুলতে হচ্ছে। রোদ পড়লেই নামিয়ে আনছি। তবে বর্ষাকালে যখন-তখন বৃষ্টি। তাই প্রায়ই আকাশের মতিগতি নজরে রাখতে হচ্ছে।” লালবাজারের আর এক রেশন ডিলার শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চার কুইন্টাল গম জমে রয়েছে। তিনি বলেন, “ভাড়াবাড়িতে দোকান চালাই। নিজে প্রতিবন্ধী। তাই ভারী বস্তা নাড়াচাড়া করা মুশকিল। গম দোকানেই রয়েছে। পোকা লেগে গেলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ডিস্ট্রিবিউটরকে সমস্যার কথা জানিয়ে রেখেছি।”

‘ওয়েস্টবেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক গুরুপদ ধক বলেন, “বহু ডিলারেরই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিলি না হওয়া গম। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছি। গম খারাপ হয়ে গেলে বড়সড় লোকসান হয়ে যাবে।” ‘অল বেঙ্গল এমআর ডিস্ট্রিবিউটরর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক তারাপদ মহাপাত্রও বলেন, “ডিলারদের তুলনায় আমাদের কাছে কয়েক গুণ বেশি গম মজুত রয়েছে। বর্ষার আবহাওয়ায় পোকা লেগে গমের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।”

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “সমস্যাটি রাজ্যের নজরে আনা হয়েছে।” খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “অগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে চালের সঙ্গে গমও বিলি করা হবে। এর মধ্যেই জমে থাকা গম শেষ হয়ে যাবে। তার পরে নতুন করে আর গম দেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Rice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy