আলোচনা: তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্যদের বৈঠকে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
তারাপীঠের জঞ্জাল রামপুরহাট এলাকায় ফেলা নিয়ে আপত্তি তুলল রামপুরহাট পুরসভা। তার জেরে নতুন জায়গার খোঁজ শুরু করল প্রশাসন। পাশাপাশি, তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে ফুল, বেলপাতা এ বার থেকে সপ্তাহের সাত দিনই পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিল মন্দির কমিটি।
বুধবার তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠক হয় তারাপীঠে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক রঞ্জন ঝা, ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায়। ছিলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। সরকারি কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়।
আশিসবাবু জানান, তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে ফুল, বেলপাতা এত দিন সপ্তাহে দু’দিন পরিষ্কার করত মল্লারপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ বার থেকে প্রতি দিন তা পরিষ্কার করতে হবে। এ কথা ওই সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারাপীঠ মন্দির কমিটির তরফে জানানো হয়, বৈঠকের ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা হবে।
মল্লারপুরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি সোমা পাঠকও তারাপীঠে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ২০১৫ সাল থেকে মাতারার মন্দিরের ফুল, বেলপাতা জৈব সার করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সপ্তাহে দু’দিন তা পরিষ্কার করা হয়। সে জন্য মাসে ১৫ হাজার টাকা মন্দির কমিটির তরফে তাঁদের দেওয়া হয়। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে প্রতি দিন ওই কাজ করতে হবে। তা নিয়ে মন্দির কমিটি দ্রুত আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছে।
তারাপীঠের জঞ্জাল রামপুরহাট পুরসভার জায়গায় ফেলা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে আপত্তি তোলেন রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি। তিনি জানান, তারাপীঠ-সহ রামপুরহাট ও নলহাটি পুরসভা, রামপুরহাট হাসপাতালের জঞ্জাল কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এক জায়গায় ফেলার সিদ্ধান্ত অনেক দিন আগে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়নি। তবুও রামপুরহাট পুরসভার জঞ্জাল ফেলার জায়গায় তারাপীঠের আবর্জনা এত দিন ফেলতে দেওয়া হয়েছে। অশ্বিনীবাবুর বক্তব্য, ‘‘সাড়ে সাত বিঘা জায়গার মধ্যে রামপুরহাট পুরসভা ও তারাপীঠ এলাকার জঞ্জাল এবং রামপুরহাট হাসপাতালের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে অসুবিধা হচ্ছে।’’ ওই আপত্তির জেরে এ দিনের বৈঠকেই তারাপীঠের জঞ্জাল ফেলার জন্য নতুন জায়গার খোঁজ শুরু করা হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাট থানার বনহাট পঞ্চায়েতের রদিপুর মৌজায় কুলবনের কাছে ১৮ একর সরকারি খাস জমি পরিদর্শনে যান জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জন ঝা। তবে ওই এলাকায় জঞ্জাল ফেলা নিয়ে স্থানীয় আদিবাসীদের আপত্তি রয়েছে বলে প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান।
এ দিন তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠকে যে সমস্ত কাজ পর্ষদ এখন করছে, তার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আশিসবাবু জানান, মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন, শ্মশানে বৈদ্যুতিকক চুল্লি নির্মাণ, জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের পাইপলাইনের কাজ শেষ হওয়ার মুখে। দ্বারকা নদের তীরে সৌন্দর্যায়ন, ফুট ওভারব্রিজ তৈরির কাজ চলছে। জলশোধন প্রকল্প, চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকের পরে তারাপীঠে আনাজ, মাছ ব্যবসায়ী এবং দোকানদার মিলিয়ে ২১৩ জনকে কর্মতীর্থ প্রকল্প ও পর্ষদের তৈরি বাজারের দোকানের চাবি দেওয়া হয়। আশিসবাবু জানান, দক্ষিনবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার বিভিন্ন রুটের ১২টি বাস এ বার থেকে তারাপীঠে আসবে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রামপুরহাট মনসুবা মোড় থেকে তারাপীঠ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে আলোর ব্যবস্থা, গাছ লাগানোর বিষয়েও বৈঠকে কথা হয়। আলোচনা করা হয় তারাপুর হাসপাতালে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy