Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Rain

শ্রাবণ-শেষের বৃষ্টিতে স্বস্তি

কৃষি দফতর জানাচ্ছে, অগস্ট মাসে পুরুলিয়ায় যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় এই ক’দিনেই তার অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এতে রোয়ার কাজ প্রায় ৪৮ শতাংশ এগিয়ে গিয়েছে।

রোপণ: রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বুন্দলা গ্রামে। ছবি: সঙ্গীত নাগ

রোপণ: রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বুন্দলা গ্রামে। ছবি: সঙ্গীত নাগ

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

দিন পনেরো আগেও খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পুরুলিয়ার অনেক এলাকায়। বাঁকুড়াতেও জলের অভাবে মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছিল বীজতলা। শ্রাবনের শেষের টানা বৃষ্টি পরিস্থিতির আমূল বদল ঘটেছে। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন দুই জেলার চাষিরা।

কৃষি দফতর জানাচ্ছে, অগস্ট মাসে পুরুলিয়ায় যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় এই ক’দিনেই তার অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এতে রোয়ার কাজ প্রায় ৪৮ শতাংশ এগিয়ে গিয়েছে। জেলার সহকারী কৃষি অধিকর্তা সুশান্ত দত্ত জানাচ্ছেন, এমন ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে অগস্টের শেষে ৮০-৯০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ করে ফেলতে পারবেন চাষিরা।

বাঁকুড়া জেলায় রবিবার থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৩৫ মিলিমিটার। জেলা উপকৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র জানাচ্ছেন, শনিবার পর্যন্ত জেলায় ধান রোয়ার কাজ হয়েছিল প্রায় ১৮ শতাংশ। গত কয়েক দিনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। তিনি বলেন, “জুন ও জুলাই মাসে বৃষ্টির প্রবল ঘাটতি ছিল। যার জেরে ধান রোয়ার কাজ করাই যায়নি। তবে অগস্টের শুরু থেকে বৃষ্টি ভাল হচ্ছে। রবিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়ায় ধান রোয়ার কাজে গতি এসেছে।” তিনি জানান, অগস্ট মাসে জেলায় বৃষ্টি হওয়ার কথা ৩০০ মিলিমিটার। এখনও পর্যন্ত ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকলে ধান চাষের গতি আরও বাড়বে বলেই আশাবাদী কৃষি মহল।

পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, জুন মাসে যেখানে গড় বৃষ্টি হয় ২৫২ মিলিমিটার, এ বার হয়েছে ১৩৬.৮ মিলিমিটার। জুলাই মাসেও প্রায় ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। সেচ ব্যবস্থা এখনও ভাল না থাকায় বার বার থমকে গিয়েছে আমনের চাষ। কখনও থমকে গিয়েছে বীজতলা তৈরি। যদি বা তৈরি হয়েছে তা শুকিয়ে যেতে বসেছিল। অনেককে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হয়। তারপরেও বৃষ্টির ঘাটতি কাটেনি। ফের থমকে যায় রোয়ার কাজ। তবে অগস্টের গোড়া থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।

পুরুলিয়ার কৃষি দফতর জানাচ্ছে, ১৩ অগস্ট পর্যন্ত জেলার ৩ লক্ষ ২৫ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা গিয়েছে। সহকারী কৃষি অধিকর্তা সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘অগস্টে পুরুলিয়ার গড় বৃষ্টিপাত ২৯০ মিলিমিটার। ১৩ তারিখের মধ্যেই বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে ১৪৫ মিলিমিটার। জমিতে যা জল জমেছে তাতে চারা রোপণ ৪৮ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’ কয়েকটি ব্লকে আবার এখনই ৬০ শতাংশ জমিতে চারারোপণ হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন সেই ব্লকগুলির সহকারী কৃষি অধিকর্তারা।

কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ১৫ অগস্টের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার পঞ্চাশ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ সম্পূর্ণ না হলে, সেই জেলায় খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে ধরা হয়। তার আগেই রোপণের কাজ গতি পাওয়ায় স্বস্তিতে কৃষি ভবন। চাষিদেরও যে উদ্বেগ অনেকটা কেটেছে তা জানাচ্ছেন কাশীপুর ব্লকের মোহন মাহাতো, সাঁতুড়ির নিমাইচাঁদ মণ্ডল, নিতুড়িয়ার কালোসোনা বাউড়ি, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের হরেকৃষ্ণ বাগদিরা।

এই পরিস্থিতিতে সবাই এখন মাঠে নেমে পড়ায় অনেকে জায়গায় কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। মানবাজারের বিশরী গ্রামের চাষি সন্তোষ মাহাতো, রাধামাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা নিতাই মাহাতো বলেন, ‘‘সবাই চাষের কাজে নেমে পড়ায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’’

তবে, বীজতলায় চারার বয়স বেড়ে যাওয়ায় পরে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক চাষিই। তাঁদের দাবি, চারার বয়স বেড়ে গেলে ফলন কমে যায়। যদিও কৃষি দফতরের দাবি, বহু চাষি এ বছর খরা সহনশীল সহভাগী প্রজাতির ধান চাষ করেছেন। ফলে চারার বয়স বাড়লেও ফলনের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Relief Shravana Rain Rainy season
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy