পরিদর্শন। দামোদরের করগালি ঘাটে। নিজস্ব চিত্র
অর্থ দফতরের তরফে অনুমোদন মিললেও করোনার জেরে থমকে ছিল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে নতুন জলপ্রকল্প তৈরির কাজ। এ বার সেই কাজে গতি এসেছে বলে দাবি রঘুনাথপুর পুরসভার। সম্প্রতি দামোদরের করগালি ঘাট থেকে জল তোলার কাজ কী ভাবে করা যায়, তা দেখতে পরিদর্শন হয়েছে। পরিদর্শক দলে ছিলেন ‘এমইডি’ (মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট)-এর বিশেষজ্ঞ বাস্তুকার এসএন বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার নির্বাহী বাস্তুকার দুর্গাদাস মুখোপাধ্যায়-সহ রঘুনাথপুরের পুর-প্রশাসক তরণী বাউড়ি, পুরসভার বাস্তুকার বিজয় মনি প্রমুখ। পুর-প্রশাসকের দাবি, ‘‘পরিদর্শনে বাস্তুকারেরা সন্তুষ্ট। পুরসভা জলপ্রকল্পের জন্য দরপত্র ডাকার কাজ-সহ অন্য কাজে দ্রুত হাত দেবে।”
রঘুনাথপুর পুর-এলাকায় বর্তমানে নিতুড়িয়ার লক্ষ্মণপুরের ইন্দো-জার্মান জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করা হয়। তবে দৈনিক যা চাহিদা, সেইমতো জল সরবরাহ করা হয় না বলে দাবি। এ পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুর শহর থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে, রঘুনাথপুর ২ ব্লকের দামোদরের করগালি ঘাট থেকে জল তুলে পুরশহরে জল সরবরাহের নতুন প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা নেয় পুরসভা। বছর দু’য়েক আগে, প্রকল্পের অনুমোদন দেয় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং রাজ্য অর্থ দফতর। বরাদ্দ করা হয় প্রায় সত্তর কোটি টাকা। ঠিক হয়, পুরসভার সাত হাজার বাড়িতে দৈনিক ছ’হাজার এমএলডি (মিলিয়ন লিটার পার ডে) জল সরবরাহের পরে, উদ্বৃত্ত জল আশপাশের ছোট-বড় কারখানায় বিক্রি করা হবে। প্রাপ্য অর্থ জলপ্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছিল পুরসভা।
এর পরে, কাজে গতি আনার চেষ্টা হলেও ২০২০-র মার্চে লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় কার্যত ‘ঠান্ডা ঘরে’ চলে যায় জলপ্রকল্পটি। পুরসভার দাবি, সম্প্রতি প্রকল্পের কাজে গতি আনতে পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। নদীগর্ভ থেকে জল তোলার পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয় পরিদর্শন করেছেন দুই পদস্থ বাস্তুকার। পাশাপাশি, নদীর পাশে পাম্পহাউস তৈরির জন্য ডিভিসির কাছ থেকে দশ ডেসিমেল জমি হস্তান্তরের বিষয়েও পুরসভা তোড়জোড় শুরু করেছে। পুরসভার বাস্তুকার বিজয় মনি জানান, নতুন প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৩.৫ এমএলডি জল দামোদর থেকে পাবে পুরসভা। সে খাতে কম-বেশি দশ লক্ষ টাকা ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। তবে নদীর পাশে পাম্পহাউস তৈরির জন্য যে জমি লাগবে, তার অর্থ এখনও দেওয়া হয়নি।
বিজয় বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিভিসির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। জমির দাম বাবদ কত টাকা লাগবে, তা ডিভিসি জানালেই টাকা দেওয়া হবে।” পুরসভা সূত্রে খবর, জমি সংক্রান্ত বিষয়টি বাদ দিলে জলপ্রকল্প তৈরিতে আর কোনও সমস্যা আপাতত নেই। শহরের প্রান্তে বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতের সেলেটি মৌজায় এক একর সরকারি জমি পুরসভাকে রিজ়ার্ভার-সহ অন্য পরিকাঠামো তৈরির জন্য ইতিমধ্যে দিয়েছে প্রশাসন।
পুর-প্রশাসকও বলেন, ‘‘ডিভিসি জমির দাম জানালেই আমরা প্রকল্পের জন্য দরপত্র ডাকার কাজ শুরু করব। নতুন প্রকল্প তৈরি হলে ভবিয্যতে রঘুনাথপুরে জলের সমস্য থাকবে না।” তবে পুরসভার দাবিকে কটাক্ষ করে বিজেপির জেলা সম্পাদক বাণেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পনেরো বছর ধরে পুরসভায় থেকেও তৃণমূল রঘুনাথপুরের জল-সমস্যা মেটাতে পারেনি। পুর-নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এখন নতুন জলপ্রকল্পের গল্প শুনিয়ে মানুষকে ভাঁওতা দিতে চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy