সিউড়ির এই পাইপ কারখানাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র
পাইপ কারখানার দুই শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে কারখানার ভিতরের পরিবেশ নিয়ে। ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে পাড়ুইয়ের ভোলাগড়িয়া গ্রামে এই পিভিসি পাইপ কারখানার দুই শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানকার আর ও চার জন শ্রমিকের অসুস্থতার লক্ষণ একই রকম বলে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভজিৎ বাগদি (২২) এবং বছর তিরিশের শেখ মিঠুন দু’জনেই ওই পাইপ কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় শুভজিতের। আর শুক্রবার মারা যান শেখ মিঠুন। অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে বলেও গ্রামবাসীরা শনিবার জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোলাগড়িয়া গ্রামে একটি পিভিসি পাইপ তৈরির কারখানা রয়েছে। ২০১১ সালে ওই কারখানাটি চালু হয়। সেখানে ১২ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহে ওই পাইপ কারখানার শ্রমিকদের ছ'জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত শুভজিতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার বাড়িতে এসে শুভজিৎ জানান যে শরীর খারাপ করছে। তিনি চোখে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন না। যন্ত্রণায় চিৎকারও করেন। পাশাপাশি ভুলে যাওয়া, শরীর অসাড় হয়ে যাওয়া সহ একাধিক সমস্যা প্রকট হয়। পরিবারের লোকজন তাঁকে বোলপুরের সিয়ান হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানেও তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকলে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
একই রকম লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শেখ মিঠুন। শুক্রবার তাঁরও মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারখানায় কোনও রাসায়নিকের প্রভাবে কি শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন? তার জেরেই কি দুজনের মৃত্যু? শুভজিৎ এর দিদি রেখা বাগদি বলেন, ‘‘ভাই সুস্থ ছিল। আগে কখনও এমন হয়নি। সেদিন কথা বলতে পারছিল না। শরীরের ভিতরে খুব কষ্ট হচ্ছিল বুঝতে পারছিলাম। তারপরেই মারা গেল।’’ কারখানায় পাইপ তৈরির কোনও রাসায়নিকের প্রভাবে এমনটা হতে পারে কিনা তা নিয়ে চিকিৎসকেরাও সন্দিহান। শুভজিৎ-এর এক আত্মীয় প্রসেনজিৎ বাগদিও বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা বললেন ওর অন্য কোনও রোগ ছিল না। তাহলে কেন এরকম হল!’’ অন্যদিকে, কারখানার মালিক শেখ মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আমার কারখানায় যাঁরা কাজ করছিলেন কেউ এখান থেকে অসুস্থ শরীরে বাড়ি ফেরেননি বলে খোঁজ নিয়েছি। ইদুজ্জোহার জন্য কারখানা ১ জুলাই থেকে ১৫ দিনের জন্য বন্ধ রয়েছে। আর যে দুজন মারা গিয়েছেন তাঁদের কারও মেডিক্যাল রিপোর্টে কারখানার রাসায়নিকের কোনও প্রভাবের উল্লেখ নেই।’’
সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy