Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
কয়েক বিঘা জমিতে আগুন রঘুনাথপুরে
Stubble Burning

জেলায় কি বাড়ছে নাড়া পোড়ানো, প্রশ্ন

যদিও জেলা কৃষি দফতরের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের মত, নাড়া পোড়াতেই এই কাণ্ড।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকে বুন্দলা সেতুর অদূরে পোড়া ধানখেত। ছবি: সঙ্গীত নাগ

রঘুনাথপুর ১ ব্লকে বুন্দলা সেতুর অদূরে পোড়া ধানখেত। ছবি: সঙ্গীত নাগ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৭
Share: Save:

কয়েক বিঘা ধানজমি জুড়ে জ্বলছে ধিকিধিকি আগুন। উঠছে ঘন কালো ধোঁয়া। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরের কাছে বুন্দলা সেতুর পাশে এমন দৃশ্য দেখে রঘুনাথপুর থানার পুলিশের টহলদারি ভ্যানের কর্মীরা তৎক্ষণাৎ খবর দেন দমকলে। পরে, দমকল গিয়ে ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় আগুন নেভায়। রবিবার দুপুরের এই ঘটনার পরে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে পুরুলিয়াতেও কি নাড়া পোড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে!

বিষয়টি নিয়ে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বুন্দলায় নাড়া পোড়ানোর জন্যই জমিতে আগুন লাগানো হয়েছিল কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। যদিও জেলা কৃষি দফতরের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের মত, নাড়া পোড়াতেই এই কাণ্ড। অন্য জেলার মতো ব্যাপক হারে না হলেও জেলায় কয়েকটি ব্লকে নাড়া পোড়ানোর কিছুটা চল রয়েছে।

পুরুলিয়া জেলার উপকৃষি অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সোমবারই দেখেছি, হুড়া, কাশীপুর এলাকার রাস্তার পাশের ধানজমির ঘাস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। রঘুনাথপুরের ঘটনাও নাড়া পোড়ানোর জন্য বলেই মনে হচ্ছে।”

দমকলের আধিকারিকেরা জানান, রঘুনাথপুর ১-এর বুন্দলা গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে প্রায় বিঘা চারেক ধানজমির সঙ্গে আশপাশের উঁচু-নিচু ডাঙা জমির একাংশ মিলিয়ে প্রায় বিঘা পাঁচেক জমি আগুনে পুড়েছে। তবে কী ভাবে আগুন লেগেছে, তা নিয়ে বিশদে কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশের একটি সূত্রের মতে, ধান কেটে নেওয়ার পরে, জমিতে শুধু পড়ে রয়েছে গাছের গোড়া। কেউ আগুন না ধরালে এক সঙ্গে এতটা জমি পুড়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জমির মালিকের খোঁজ চলছে।

কৃষি দফতরের মতে, ধান কাটার পরে ফসলের অবশিষ্টাংশ দ্রুত নষ্ট করে সেই জমিতে ডালশস্য বা আনাজ চাষ শুরুর জন্যই নাড়া পুড়িয়ে দেন চাষিদের একাংশ। বুন্দলা গ্রামের আশপাশের জমিতে ধান চাষের পরে আনাজ চাষের প্রচলন রয়েছে। তাই নাড়া পুড়িয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ। এলাকাবাসী মথুর বাউরি, সমীর বাউরিরা জানান, অনেকটা জমি জুড়ে আগুন লেগেছিল। সময়মতো দমকল এসে আগুন নেভানোয় স্বস্তি মিলেছে। তাঁদের কথায়, ‘‘ওই এলাকার জমিতে আমাদের গরু, ছাগল চরে। মুরগিও মাঝেমধ্যে যায়। আগুনে গবাদি পশুর ক্ষতি হতে পারত।”

আমন-পরবর্তী চাষে সুবিধা পেতে ধান কাটার পরে, ফসলের অবশিষ্টাংশ বা নাড়া পুড়িয়ে দেওয়ার চল এখন অন্য রাজ্যের পাশাপাশি, এ রাজ্যেও বেড়েছে। কিন্তু এতে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে জমির উর্বরতাও প্রভাবিত হয়। আগুনে পুড়ে মাটি শক্ত হয়ে যায়। জমিতে থাকা উপকারী জীবাণুরা মারা যাওয়ায় জমির উর্বরতা কমে যায় অনেকটাই। আশিসবাবুর কথায়, ‘‘নাড়া না পোড়াতে কৃষি দফতর সার্বিক প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু এটা যে ক্ষতিকর, তা চাষিরা না বুঝলে সমস্যা মিটবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Stubble Burning Raghunathpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy