প্রতি বছর এখানে পুজো হয়। এ বার আয়োেজন নেই। নিজস্ব চিত্র
রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। তার আগে পুরুলিয়ার আদ্রায় রেলের দফতরগুলিতে পুজোর আগের চূড়ান্ত ব্যস্ততার লেশমাত্র নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে, কোনও দফতরে মণ্ডপ বাঁধার বাঁশ পড়ে রয়েছে, কোথাও ছোট মাপের মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে ঢিমেতালে। গত বছরে একুশ ফুটের মূর্তি গড়ে চমকে দেওয়া বাঙালী সমিতির মাঠে মিলনমেলার বিশ্বকর্মা পুজোয় গিয়ে দেখা গেল, মণ্ডপই তৈরি হয়নি। তিন-চার ফুটের মূর্তি গড়ে কোনও মতে পুজো করার কথা ভাবছেন উদ্যোক্তারা। করোনা-আবহে রেল-শহরে বিশ্বকর্মা পুজোর আগে ছবিটা এমনই।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবারই নতুন করে ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন আদ্রায়। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৫৫। তার মধ্যে অন্তত সত্তর শতাংশই রেলকর্মী। পুজোর উদ্যোক্তা তথা রেলকর্মীদের একাংশের মতে, এমন অবস্থায় বড় মাপের পুজো হলে দর্শনার্থীদের জমায়েত হতে পারে। এই আশঙ্কায় কার্যত নিয়মরক্ষার পুজো হচ্ছে। আদ্রার পিডব্লিউআই (ইস্ট) দফতরের বড় পুজোর উদ্যোক্তা তথা রেলকর্মী সংগঠন ‘মেনস কংগ্রেস’-এর নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অনেক রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে সুস্থও হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজো বড় আকারে করলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা পুরোমাত্রায় থেকেই যায়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই কোনও মতে পুজোর ভাবনা।’’
এমনিতে আদ্রায় জাঁকজমকের নিরিখে দুর্গাপুজোর চেয়ে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই বিশ্বকর্মা পুজো। এক দিনের পুজো হলেও আদ্রায় রেলের দফতর বা অন্য মণ্ডপে প্রতিমা থাকে তিন-চার দিন ধরে। মণ্ডপগুলিতে রেলের কর্মীরাই তৈরি করেন রেল সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল। কোথাও ছোটে টয় ট্রেন। নজরকাড়া আলোকসজ্জা তো রয়েছেই। পাশাপাশি, পুজো উপলক্ষে নাগরদোলা থেকে শুরু করে হরেক রকম খেলনা, খাবার, গৃহস্থালির সামগ্রীর অসংখ্য দোকান বসে পুজোর দিনগুলিতে। আদ্রার আশপাশের গ্রাম-সহ পাশের থানাগুলির গ্রামের বাসিন্দারা আসতেন আদ্রায়।
সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (বিদ্যুৎ) সাউথ-এর ইনচার্জ তথা পুজোর উদ্যোক্তা অপরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে বিশ্বকর্মা পুজো আদ্রায় ছিল রীতিমতো জমজমাট ব্যাপার। মাঝে এক বার দাবিও উঠেছিল, বিশ্বকর্মা পুজোয় আদ্রায় রেলের দফতরগুলি ছুটি দেওয়া হোক।” তবে ছবিটা এ বারে পুরো বদলে গিয়েছে। অপরূপবাবুও জানান, করোনার কারণে বড় মাপের পুজো করার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউ।
এই পরিস্থিতিতে সঙ্কটে মূর্তিশিল্পীরাও। আদ্রার অন্যতম শিল্পী অজিত কুম্ভকার জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি মূর্তিরও বরাত আসেনি। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছি, ছোট মাপের পুজো হবে। তাই দেড়-দু’ফুটের মূর্তি গড়ে রেখেছি।” তবে সেই মূর্তিও বিক্রি হবে কি না, সন্দিহান অজিতবাবু। অন্য দিকে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে আদ্রায় পুজোয় কোনও ভাবে জমায়েত না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। উদ্যোক্তারাও জানিয়েছেন, দশ-পনেরো জনকে নিয়ে হবে পুজোর আয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy