বৃহস্পতিবার মেলার পথে। ভিজতে ভিজতে বিকিকিনিও। ছবি-বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
মেঘলা আকাশে বৃষ্টির ভ্রূকুটি ছিলই। দুপুর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিতে তাল কাটল পৌষমেলার। সাজানো পসরা ভিজল, ক্রেতারা ছুটলেন ছাউনির খোঁজে। কেউ ছাতা মাথায় তো কেউ সোয়েটারের উপরে বর্ষাতি চাপিয়ে ঘুরলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার জমল না মেলা।
লক্ষ্মীবারেই লক্ষ্মীলাভ হল না বলে মন খারাপ মেদিনীপুরের পটশিল্পী থেকে বাঁকুড়ার ডোকরা বা ত্রিপুরার বেত শিল্পীদের। মাঝখান থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে পটচিত্র থেকে মাটির পুতুল বা রকমারি পোশাক। বর্ধমান থেকে আসা মৃৎশিল্পী অসীমা রানা বলেন, ‘‘ভোর থেকেই মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে আর থামছে। কত আশা করেছিলাম হাতের কাজগুলো বিক্রি হবে, তা না জলে সব নষ্ট হয়ে গেল। পয়সা রোজগারের বদলে একগাদা টাকা জলে গেল আমাদের।’’ অসীমার মতো বহু শিল্পী পৌষমেলায় তাঁদের শিল্পকর্ম নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসেন। মেলায় ঘোরা মানুষজন চলতে চলতেই পথের ধারে বসা সেই পসরা থেকে তুলে নেন পছন্দের শিল্পটি। এ দিন সবথেকে ক্ষতি হয়েছে তাঁদের।
সকালে কিছুটা বৃষ্টি হয়ে থেমে যাওয়ায় লোকজন মেলামুখী হতে শুরু করেছিল। কিন্তু দুপুর দু’টোর পরে ফের আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। বিকেল পর্যন্ত একটানা বৃষ্টি চলে। এ দিন বহু দোকান দেরিতে খুলেছে। ক্রেতারা বন্ধ দোকানের সামনে হাঁকাহাঁকি করে ফিরে গিয়েছেন এমন দৃশ্যও দেখা গিয়েছে। মেলায় বিশ্বভারতীর প্রদর্শনী কক্ষটি খোলা থাকলেও তাতে এ দিন লোক খুব কম ছিল। খারাপ আবহাওয়ার জন্য মেলায় এ দিন ভিড় না থাকায় সব মেলার মতোই পৌষমেলারও অন্যতম আকর্ষণ নাগরদোলা, ব্রেক ড্যান্স, ট্রয়ট্রেনে চড়ার লোক তেমন ছিল না। মেলায় আর কিছু বিক্রি হোক বা না হোক, খাবারের দোকানে সবসময়ই ক্রেতা থাকে। দুমকার বাসিন্দা অনুপ সাহা পৌষমেলায় মোগলাই, চাউমিনের দোকান দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বাইরে থেকে পৌষমেলায় এসেছেন, তাঁরা কেউ এই ঠান্ডায় আর বৃষ্টিতে ভেজার ঝুঁকি নেননি। তাই এ দিন ভিড় কম, বাজার অন্যদিনের মতো জমেনি।’’ পৌষমেলায় ঘুরতে যাওয়া কলকাতার আত্রেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘শীতের পোশাক নিয়ে এসেছি, বর্ষাতি বা ছাতা তো আনিনি। এই ঠান্ডায় ভিজলে আর দেখতে হবে না। তাই পৌষমেলা দেখতে এসে হোটেলে ঘরবন্দি হয়েই থাকতে হল সারাটা দিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy