তৎপর: আলু খেতে কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টির জন্য এমনিতেই আলুর চাষ দেরিতে হয়েছে। তার উপরে সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও কুয়াশার জন্য আলুর পরিচর্যা এবং চাপান সার দেওয়ার কাজ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে নাবিধসা রোগও। এর ফলে ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খোদ কৃষি দফতরের। জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) অমরকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘কুয়াশা ও বৃষ্টির জন্য চাপান সার ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যা দিতে পারছেন না চাষিরা। এজন্য ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
কৃষি দফতর এবং স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছর জেলায় ২১০০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এ বারে তার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ২২০০০ হেক্টর। কৃষি দফতরের সর্বশেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী ১৯০০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কৃষি দফতরের দাবি, চাষের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাবে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে হেক্টর প্রতি ৩০০ টন।
সাধারণত অক্টোবর মাসের শুরু থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আলু চাষের উপযুক্ত সময় বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু এ বারে বৃষ্টির কারণে ওই সময়সীমার মধ্যে আলুচাষ করতে পারেননি বেশিরভাগ চাষি। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায় আলু চাষ করতে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাষ হলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মার্চের প্রথমেই আলু উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু দেরিতে চাষ হওয়ার জন্য এ বারে বেশিরভাগ জমির আলু উঠতে মার্চ হয়ে যাবে বলে চাষিদের দাবি।
গোদের উপরে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও কুয়াশা। চাষিরা প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে পারছেন না। পারছেন না চাপান সার দিতেও। কোথাও কোথাও নাবিধসা দেখা দিয়েছে বলে চাষিদের দাবি। তার ফলে চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে। বিঘে প্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ করে বিঘে দু’য়েক জমিতে আলু চাষ করেছিলেন ময়ূরেশ্বরের নারায়ণঘাটির প্রবীর মণ্ডল, লাভপুরের দরবারপুরের এহেসান সেখরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘অন্য বছর আমরা এতদিন আগাম আলু তুলে ফেলি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এ বারে চাষ করতে দেরি হয়ে গিয়েছে। তার উপরে আচমকা কয়েকদিনের বৃষ্টি আরও বিপাকে ফেলে দিয়েছে। জমি ভিজে থাকায় মাটি টানা, চাপান সার দেওয়ার কাজ করতে পারছি না। তাই ফলন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’’ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাঁইথিয়ার বাগডোলার সুদীপ মাহারা, গোবিন্দপুরের মহাদেব মণ্ডলরাও। তাঁদের কথায়, ‘‘বিঘেখানেক করে জমিতে আলু লাগিয়েছিলাম। তার মধ্যে অর্ধেক জমিতে নাবিধসা দেখা দিয়েছে।’’
শুধু চাষিরাই নন, বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারাও। বাজারে নতুন আলুর জোগান কম থাকায় চড়া দামে আলু কিনতে হচ্ছে তাদের। নানুরের সুখেন মণ্ডল, আমোদপুরের সজল চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘গত বছর এই সময় ৮-৯ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছি। এ বারে ১৮-২০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে।’’
জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) অমরকুমার মণ্ডল অবশ্য জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত নাবিধসার প্রকোপের কোনও খবর নেই। তবু কৃষি দফতরের পক্ষে থেকে নাবিধসা রুখতে প্রয়োজনীয় ছত্রাকনাশক প্রয়োগের জন্য প্রচার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy