(বাঁ দিকে) জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরার বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি। (ডান দিকে) অনশনমঞ্চে স্নিগ্ধা। ছবি: ফেসবুক এবং নিজস্ব।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে অনশনে বসা জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম স্নিগ্ধা হাজরার বাড়িতে গেল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাত এবং শুক্রবার সকালে স্নিগ্ধার বাঁকুড়া শহরের প্রতাপবাগানের বাড়িতে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। তবে জুনিয়র ডাক্তারের পরিবারের কারও দেখা পাননি তাঁরা। মাঝরাতে মিনিট ৪০ দরজার বাইরে কড়া নেড়ে ফিরে যাওয়ার পরে সকালে মূল দরজা তালাবন্ধ দেখে দ্বিতীয় বার ফিরতে হয়েছে পুলিশকে। সরকারি ভাবে পুলিশের তরফে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, অনশনরত চিকিৎসকের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল পুলিশ। অন্য দিকে, স্নিগ্ধার পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বাড়ির সদস্যেরা আপাতত প্রতাপনগরে নেই। তাঁরা বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছেন। জুনিয়র ডাক্তারের পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পারা গিয়েছে, সপ্তমীর রাতে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল।
মাস ছয়েক আগে বিয়ে হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধার। স্বামী দেবাশিস হালদারও ওই মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার। আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে কয়েক জন সহকর্মী তথা সহযোদ্ধার সঙ্গে আমরণ অনশনে বসেছেন স্নিগ্ধা। আন্দোলনকারীদের মধ্যে রয়েছেন দেবাশিসও। তবে তিনি অনশন করছেন না।
শুক্রবার সপ্তম দিনে পা দিয়েছে স্নিগ্ধাদের আমরণ অনশন। গত শনিবার রাত থেকে তাঁরা অনশনে বসেছেন। অনশনের ষষ্ঠ দিন, বৃহস্পতিবার আরজি করের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। রাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। স্নিগ্ধার পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ প্রতাপবাগানের বাড়িতে যায় পুলিশ। একাধিক বার দরজায় কড়াও নাড়েন পুলিশকর্মীরা। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে অপেক্ষার পরেও স্নিগ্ধার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে না বেরোনোয় পুলিশ চলে যায়।
শুক্রবার সকালে আবার এক বার ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু কারও দেখা পায়নি। স্নিগ্ধার পরিবারের এক সদস্যের দাবি, এর পর পুলিশ ফোনে যোগাযোগ করে স্নিগ্ধার বাবা-মায়ের সঙ্গে। মেয়ে যাতে অনশন তুলে নেন, নিজের শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করেন, ওই বিষয়ে তাঁকে বোঝাতে অনুরোধ করা হয়। তবে স্নিগ্ধার বাবা জানান, মেয়ে বড় হয়েছেন এবং তাঁদের থেকে অনেক দূরে রয়েছেন। মেয়ে জেনেবুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁরা কথা বলবেন না। অন্য দিকে, স্নিগ্ধার বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও অনশন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘লাগাতার অনশনে স্নিগ্ধা হাজরার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এই অবস্থায় তিনি যাতে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেন, সেই অনুরোধ জানাতেই পরিবারের কাছে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু পরিবারের লোকজন পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত কর বলেন, ‘‘অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে যদি সরকারের এতই চিন্তা হয়, তা হলে তারা যে দাবিগুলিকে সামনে রেখে অনশনকারীরা অনশন করছেন, সে গুলি অবিলম্বে মেনে নিক। রাত দেড়টা-দু’টোর সময় বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে, কলেজের প্রিন্সিপালকে চিঠি পাঠিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy