ব্যবসায়ী তাপস রায়। নিজস্ব চিত্র।
দুষ্কৃতীরা এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও তাঁর থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শী বন্ধুর থেকে সেই খবর পেয়ে অপহরণের ছক ভেস্তে দিল পুলিশ।
বছর শেষের দিন, বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর থানা এলাকার লোবা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঝাউডাঙায়। দুষ্কৃতীদের কবল থেকে জখম ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করাই নয়, ঘটনায় অভিযুক্ত চালক সমেত পাঁচ দুষ্কৃতীকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র, গামছা এবং যে গাড়িটিকে করে অপহরণের চেষ্টা হয়েছিল সেই গাড়িটিকেও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এমন ঘটনায় তাজ্জব অনেকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা হল সাদ্দাম খান, নজরুল খান, বরুণ ডোম, শেখ ইনতাজ, শেখ আনিসুর। প্রথম দু’জনের ও শেখ ইনতাজের বাড়ি দুবরজাপুরের হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চিৎগ্রাম ও জালালপুরে। বাকিদের বাড়ি লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশডাঙা ও অমুড়ি গ্রামে। কী ভাবে ঘটনাটি ঘটাতে চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা, আগে এমন অপরাধ করেছে কিনা জানতে নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। দুবরাজপুর আদালতের নির্দেশে ধৃতদের পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছেww পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছে তাঁর নাম তাপস রায়। আদতে তিনি তিনি লোবার চড়কডাঙার বাসিন্দা। এলাকায় একটি চিমনি ইটের ভাটা ছাড়াও, বোলপুর ও দুর্গাপুরে একাধিক ব্যবসা রয়েছে তাপসবাবুর। অভিযোগ, তাঁকে বৃহস্পতিবার দুপুর একটা নাগাদ অপহরণ করে একটি ভ্যানের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তার পরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে। গাড়িটি জাতীয় সড়ক ধরে পাণ্ডবেশ্বরের দিকে চলে যাচ্ছিল। সময়ে খবর পেয়েই ধাওয়া করে গাড়িটিকে ধরে ফেলে পুলিশ। তবে চিৎকার আটকাতে গাড়ির মধ্যেই ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নাকে কামড় দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তাপসবাবুর চিকিৎসাও করাতে হয়েছে।
তিনি বলছেন, ‘‘পরিবার নিয়ে দুর্গাপুরে থাকি। বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের টাকা মেটাতে ইটভাটায় এসেছিলাম। সেই খবর ওদের কাছে ছিল। আমি বাইকে করে ফেরার পথে পরিচিত বরুণ ডোম পথ আটাকায়। বাইক থামাতেই গাড়ি থেকে অন্যরা নেমে মুখে গামছা দিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায়, মারধর করে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি যখন ঘটছে তখনই ইটভাটা থেকে তাপসবাবুর এক বন্ধু বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। সময় নষ্ট না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
ঘটনার তদন্তে বৃহস্পতিবার রাতেই দুবরাজপুর থানায় আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার ও ডেপুটি পুলিশ সুপার (ক্রাইম) ফিরোজ হেসেন। হেফাজতে নিয়ে ঘটনার আরও গভীরে যেতে চাইছে পুলিশ। কারণ, দুষ্কৃতীদের ওই দলটির বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy