স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আহত পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
জুয়ার আসরে অভিযানে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হলেন ঝালদা থানার এক পুলিশকর্মী। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ঝালদার ইচাগ গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, তপন দাস নামে ওই কনস্টেবল পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার জেরে তপ্ত ইচাগ গ্রাম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকালে গোপন সূত্রে খবর আসে, ইচাগ গ্রামে একটি মন্দিরের সামনে জুয়ার আসর বসেছে। এক সাব ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জুয়ার ঠেকে অভিযান চালায়। পুলিশকে দেখে মোটরবাইক ফেলে পালায় জুয়ারিরা। তবে ধরা পড়ে যায় এক জন।
ধৃতকে গাড়িতে তুলে কয়েকজন পুলিশকর্মী থানার উদ্দেশে রওনা দেন। এর পরে কয়েকজন সিভিক কর্মীকে নিয়ে তপনবাবু যখন জুয়ারিদের ফেলে যাওয়া বাইকগুলি গাড়িতে তুলছিলেন, তখনই তাঁদের উপরে হামলা হয়।
পুলিশের দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন। ঘিরে ধরে লোহার রড দিয়ে তপনবাবুর মাথায় একাধিক বার আঘাত করা হয়। তাঁকে ফেলে পালিয়ে যান সিভিক কর্মীরা।
ঘটনার খবর পেয়ে ঝালদা থানা থেকে বিশাল বাহিনী পাঠানো হয় ইচাগ গ্রামে। পুলিশকর্মীরা রক্তাক্ত অবস্থায় তপনবাবুকে উদ্ধার করে ঝালদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু মাথার চোট গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দেবেন মাহাতো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার তদন্তের ভিত্তিতে নরোত্তম মাহাতো, অভিজিৎ বৈষ্ণব, কৃষ্ণপদ মাহাতো এবং সোনারাম মাহাতো নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নরোত্তম এবং সোনারামের বাড়ি ঝালদা থানার জারগো গ্রামে। অভিজিৎ ঝালদা শহরের আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা। কৃষ্ণপদর বাড়ি ইচাগ গ্রামে।
বৃহস্পতিবার ফোনে তপনবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ পৌঁছতে একটু দেরি করলে ওরা আমাকে মেরে ফেলত। মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে। শরীরের একাধিক জায়গায় চোট রয়েছে।’’
তপনবাবু বলেন, ‘‘জুয়ারিদের বাইকগুলো ‘পিক-আপ’ ভ্যানে তোলার সময় আমার উপরে হামলা হয়।’’
বৃহস্পতিবার ইচাগ গ্রামের পরিবেশ ছিল থমথমে। মোড়ে-মোড়ে জটলা থাকলেও বুধবারের ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি কেউ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, এখানে কয়েক বছর ধরেই জুয়ার আসর বসছে। ঝাড়খণ্ড থেকেও জুয়া খেলতে আসে অনেকে। এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন জুয়ার ঠেকের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ ওই গ্রামবাসীর।
এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ জানিয়েছেন, জুয়া খেলা, সরকারি কাজে পুলিশকে বাধাদান এবং খুনের চেষ্টা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে অভিযান চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy