পুরুলিয়ার জয়পুর থানার পুলিশের হেফাজতে শঙ্কর বাউরি। নিজস্ব চিত্র
রাস্তায় পুলিশ কর্মীরা নাকা চেকিং চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ কর্মীদের নজরে আসে, এক ব্যক্তি দ্রুত পা চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। সঙ্গে সঙ্গে পিছু ধাওয়া করেন পুলিশ কর্মীরা। লোকটিও ছুটতে থাকে। পুলিশের দাবি, লোকটিকে আটকে তল্লাশি করতেই, মেলে তাঁর কোমরে গুঁজে রাখা একটি দেশি পিস্তল। সঙ্গে কয়েক রাউন্ড গুলি। সোমবার বিকেলে পুরুলিয়া-বোকারো (৩২ নম্বর) জাতীয় সড়কে জয়পুর থানার কাঁঠালটাঁড় এলাকা থেকে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃত শঙ্কর বাউরির বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার পিঞ্জরাজোড়া থানার নারায়ণপুর গ্রামে। তে কী উদ্দেশে ওই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসেছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই জাতীয় সড়কের উপরে কাঁঠালটাঁড় মোড়টিকে পুলিশের ভাষায় ‘স্ট্যাটেজিক পয়েন্ট’ বলা হয়। কারণ, ওই এলাকার চারপাশে ঝাড়খণ্ড। ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ওই মোড় হয়ে পুরুলিয়ায় ঢোকেন। সে কারণে এই মোড়ে দিনের বেশির ভাগ সময়ই পুলিশি নজরদারি থাকে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে পুলিশ আধিকারিকদের ঝাড়খণ্ড সীমানায় নজরদারি বাড়াতে বলেন। তারপরে আরও সতর্ক হয়েছে পুলিশ।
সোমবার বিকেলেও জয়পুর থানার এএসআই জয়ন্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এই মোড়ে নাকা চেকিং চলছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, নাকা চেকিংয়ে সাধারণত মোটরবাইক বা গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। যথারীতি সে ভাবেই তল্লাশি চলছিল। সেই সময় ওই ব্যক্তি রাস্তা ধরে হেঁটে আসছিলেন। হঠাৎ তিনি জোরে জোরে পা চালিয়ে সরে পড়ার চেষ্টা করেন। তা দেকেই পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ তাকে ডাকতেই সে হঠাৎ ছুটতে শুরু করে। তখন পুলিশ কর্মীরাও দৌড়ে তাকে ধরে ফেলেন। তল্লাশি করতেই দেখা যায়, জামার তলায় কোমরে গোঁজা রয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র। সঙ্গে তিনটি গুলি।
প্রথামিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার জয়পুরের বড়টাঁড়ে হাট বসে। সেখানে ছিনতাইয়ের মতলবে শঙ্কর এসেছিল বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডেও মামলা রয়েছে। সেখানকার পুলিশ শঙ্করকে খুঁজছিল। ১৯৯৫ সালে বোকারোর একটি ডাকাতির মামলায় পুলিশ দীর্ঘদিন ধরেই তার খোঁজ করছিল। ঝাড়খণ্ড পুলিশের কাছে খবর ছিল, সীমানা পেরিয়ে অভিযুক্ত জয়পুরের কোনও গ্রামে আত্মগোপন করে রয়েছে। কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি এত দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy