সরেজমিন: বড়রায় তৃণমূলের কার্যালয়ে বিস্ফোরণের তদন্তে সিআইডি বম্ব স্কোয়াডের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার কাঁকরতলায়। নিজস্ব চিত্র
কাঁকরতলার বড়রা গ্রামে তৃণমূল কার্যালয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হল। এলাকায় তাঁরা তৃণমূল কর্মী-সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। মঙ্গলবার দুবরাজপুর আদালত চত্বরে ধৃতদের কয়েক জনও দাবি করেন, তাঁরা ‘অনুব্রতের দলের লোক’। এ নিয়ে প্রশ্নের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য দিতে চাননি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি শুধু বলেন, ‘‘কিছুই বলব না।’’
বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের মন্তব্য, ‘‘এরা তো ঝাড়খণ্ডের কেউ নন। আমি গত কালই বলেছিলাম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত মামলাতেও যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা তৃণমূলেরই লোক।’’
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকালের ওই বিস্ফোরণের পরে থেকেই তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। কারা ওই দলীয় কার্যালয়ে যাতায়াত করত, সেই খোঁজখবর নেওয়ার পরেই সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলেন— শেখ আনসার, শেখ সাত্তার, শেখ সালাউদ্দিন, শেখ হাসমত, শেখ এনামুল, শেখ নাজমুল, শেখ সাজু। যাঁদের মধ্যে অন্তত দু’জন রয়েছেন, যাঁরা শেখ আজফার ওরফে কালোর আত্মীয়। বাকিরা তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, ওই কার্যালয় ছিল কালোরই দখলে। ঘটনার পরেই তিনি গা-ঢাকা দেন। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য কালোকে প্রকাশ্যে তাঁদের দলের নেতা হিসেবে স্বীকার করতে চাইছেন না।
অন্য দিকে, এ দিন খয়রাশোলে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে কে কোন পদ পাবেন, তা নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ, ব্লক কার্যকরী সভাপতি উজ্জ্বল হক কাদেরী, খয়রাশোলে তৃণমূলের অন্যতম নেতা স্বপন সেন এবং জেলা কমিটির তরফে দুবরাজপুরের পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে। সেখানে বড়রা পঞ্চায়েতের দায়িত্বে যাঁর নাম উঠে এসেছে, তিনিও কালোরই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। দলীয় সূত্রে খবর, সোমবারের বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পরে কালোর লোক কেন প্রধান হবেন, তা নিয়ে দলের কয়েক জন নেতা মৃদু আপত্তি তুললেও, তা ধোপে টেকেনি।
ধৃতদের এ দিন দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে সাত্তার, সালাউদ্দিন ও হাসমতকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। বাকিদের পাঠানো হয় ১৪ দিনের জেল হেফাজতে। ধৃতেরা প্রত্যেকই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। তাঁদের বক্তব্য— ‘‘ঘটনার সময়ে আমরা বাড়িতেই ছিলাম। পুলিশ কোনও কারণ ছাড়াই আমাদের ধরে এনেছে।’’ তদন্তকারীদের বক্তব্য, ধৃতদের মধ্যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ দিনই সকালে সিআইডি বম্ব স্কোয়াডের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করে। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল অবশ্য জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে নতুন কোনও সূত্র মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy