জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে শ্রীশ্রী মা সারদার বিশেষ পুজো। নিজস্ব চিত্র
করোনা-পর্বে নানা বিধিনিষেধ ছিল। সে সব শিথিল হওয়ার পরে শ্রীশ্রীমা সারদার জন্মতিথিতে পুরনো উচ্ছ্বাসের ছবি ফিরল জয়রামবাটিতে। বৃহস্পতিবার মাতৃমন্দিরে ভোর থেকেই পুণ্যার্থীদের ঢল নামল।
শ্রীশ্রী মায়ের ১৭০তম জন্মতিথি উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরেই জয়রামবাটি সেজে উঠছিল। এ দিন দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা এসে মাতৃমন্দিরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মাতৃমন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ জানান, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টায় মঙ্গলারতির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পর্যায়ক্রমে চলে সানাই, বেদপাঠ, ভক্তিগীতি। মায়ের বিশেষ পুজো হয়।
সকালে স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া ও ভক্তদের নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বেরোয়। সিহড় গ্রামের শান্তিনাথ শিবমন্দির পর্যন্ত শোভাযাত্রা যায়। শোভাযাত্রায় থাকা বেলঘরিয়ার দীপান্বিতা দাস, চান্দ্রেয়ী ভট্টাচার্যেরা বলেন, ‘‘গত দু’বছর করোনা অতিমারির জন্য মাতৃমন্দিরে আসা হয়নি। মন ব্যাকুল ছিল। জয়রামবাটি বেড়াতে এসে খুব ভাল লাগার অনুভূতি নিয়ে বাড়ি ফিরব। মায়ের জন্মতিথির অনুষ্ঠানের শরিক হয়েধন্য হলাম।’’
মাতৃমন্দিরের মুখপাত্র স্বামী পররূপানন্দ বলেন, ‘‘মায়ের জন্মতিথি আমাদের কাছে অতি প্রিয় উৎসব। অতিমারি অতিক্রম করে মানুষের ঢল নেমেছে। এ দিন প্রায় ২৫ হাজার পুণ্যার্থীর জন্য প্রসাদ তৈরি করা হয়। এ দিন যাঁরা এসেছেন, যাঁরা আসেননিস প্রত্যেকের কাছে মায়ের আশীর্বাদ বর্ষিত হোক।’’
মাতৃমন্দির লাগোয়া সাংস্কৃতিক মঞ্চে দিনভর চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভক্তিগীতি পরিবেশন করেন স্বামী কৃপাকরানন্দ। ধর্মসভার উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বামী শিবস্থানন্দ। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বামী লোকোত্তরানন্দ। বক্তব্য রাখেন স্বামী ধ্যাননিষ্ঠানন্দ। শতরূপে সারদা নামে একটি গীতিআলেখ্য পরিবেশন করেন আলমবাজারের শিল্পীরা। ভক্তিগীতি পরিবেশন করেন মাহসুজার রহমান। উপস্থিত পুণ্যার্থীদের বাউল গানে মাতান নাড়ুগোপাল চক্রবর্তী। সন্ধ্যায়ছিল ছৌনাচ।
বহু দিন পরে ভক্তদের এমন ভিড় দেখে খুশি স্থানীয়েরাও। এলাকার বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ, নীলকন্ঠ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুনরায় ছন্দে ফিরল জয়রামবাটি।’’ স্থানীয় গাড়িচালক তাপস মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পরে পুণ্যার্থীদের এ রকম ঢল দেখা গেল। দীর্ঘদিন বসে থাকার পরে রুটিরুজির জন্য যা খুবদরকার ছিল।’’
স্থানীয় ব্যবসায়ী অর্ণব ঘোষ জানান, গত দু’ছর কার্যত মাছি তাড়িয়েছেন তাঁরা। তবে এ দিন দোকান সামাল দিতে হিমশিম খান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy