মৃত দম্পতি। নিজস্ব চিত্র
পারিবারিক বিবাদের জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার গভীর রাতে রামপুরহাট থানার দখলবাটি গ্রামের মালপাড়ার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের নাম পরেশ মাল (৪৭), তমালী মাল (৪২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনমজুর ছিলেন পরেশবাবু। ওই দম্পতির দুই মেয়ে রয়েছে। বছর দু’য়েক আগে বড় মেয়ের বিয়ে হয়। ছোট মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেনির ছাত্রী। শুক্রবার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে একটি ঘরে ঘুমোতে যান পরেশবাবু। ছোটমেয়ে রুমি ছিল পাশের ঘরে।
শনিবার দুপুরে রুমি বলে, ‘‘রাত তখন প্রায় ১টা। বারান্দায় মায়ের গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বেরতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি মায়ের সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। বাবা ওর গলা টিপে ধরেছে।’’
মাল পরিবারের কয়েক জন পড়শি জানান, ঘরের ভিতর থেকেই জুড়ে দিয়েছিল রুমি। আশপাশের বাড়ি থেকে অন্য পরিজনেরা পরেশদের বাড়ির দরজায় ভিড় জমান। কিন্তু ওই দরজা ভিতর থেকে তালা বন্ধ ছিল। কেউ তখন ভিতরে ঢুকতে পারেননি। রুমি জানায়, বাড়ির বাইরে থেকেই স্ত্রীকে মারতে পরেশকে নিষেধ
করেন সকলে। কিন্তু কারও কথা না শুনে তামালিদেবীকে আরও মারধর করেন পরেশ।
রুমি বলে, ‘‘ঘরে একটি হাতুড়ি খুঁজে পেয়ে তা দিয়ে দরজার তালা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসি। বাবাকে বাধা দিতে যেতেই আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। বাইরের দরজা খুলে দিই। জ্যাঠা, কাকারা ঢুকতেই মাকে ছেড়ে দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যায় বাবা। সেখানে রাখা কীটনাশক খেয়ে ফেলে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে মারধর করার আগেই বাড়িতে রাখা কীটনাশকের কিছুটা খেয়েছিলেন পরেশ। স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত করার পরে ফের কীটনাশক খান। তমালীদেবীকে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন পরিজনেরা। পরেশবাবু বাড়িতেই মারা যান। শনিবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তমালীদেবীর।
পুলিশ সূত্রে খবর, তমালীদেবীকে কুঠার, হাঁসুয়া, কাস্তে দিয়ে কোপানো হয়েছিল। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর গলা টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন পরেশবাবু। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা হাতুড়ি, কুঠার, হাঁসুয়া, কাস্তে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে দখলবাটি গ্রামে পরেশবাবুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় যে বিছানায় পরেশবাবু ও তমালীদেবী শুয়েছিলেন, তাতে রক্তের দাগ। বাড়ির বারান্দার বিভিন্ন জায়গাতেও রয়েছে রক্তের দাগ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, স্ত্রীকে অনেক দিন ধরে কোনও কারণে সন্দেহ করতেন পরেশবাবু। তা নিয়ে দু’জনের ঝামেলাও হতো। তা থেকেই পরেশবাবু এই কাণ্ড করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy