পরীক্ষা বন্ধের নোটিস। নিজস্ব চিত্র
কেউ আসছেন বুকে যন্ত্রণা নিয়ে, কারও আবার হাড়ে ফাটল। অথচ এক্স-রে হচ্ছে না। বাঁকুড়া মেডিক্যালের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন খারাপ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের ডিজিটাল এক্স-রে পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। যদিও হাসপাতালের কর্তাদের অনেকেরই কাছে সেই খবর নেই। এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শুভেন্দুবিকাশ সাহার কাছে বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হলে প্রথমে তিনি বলেন, “ডিজিটাল এক্স-রে বন্ধ রয়েছে বলে আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।” পরে তিনি বলেন, “মেশিনে কিছু সমস্যা রয়েছে। মেরামতির কাজ চলছে। এই কারণেই ডিজিটাল এক্স-রে পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।” হাসপাতাল সুপারের দাবি, এই ঘটনায় অবশ্য রোগীদের পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে না। তিনি বলেন, “হাসপাতালের ইন্ডোর ও আউটডোরে বেশ কিছু এক্স-রে মেশিন রয়েছে। সেখানে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।”
এ দিন ডিজিটাল এক্স-রে রুমের সামনে গিয়ে দেখা গেল, মেশিন খারাপ রয়েছে বলে নোটিশ দেওয়া হয়েছে দরজায়। আত্মীয়েরা রোগীদের নিয়ে আসছেন সেখানে এক্স-রে করানোর জন্য। তাঁদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মেশিন ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এক্স-রে করা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে বাইরে কোথায় এক্স-রে করানো যায়, তা নিয়েও খোঁজ খবর নিচ্ছেন কেউ কেউ। হাসপাতালের ইন্ডোর, আউটডোরের অন্যান্য এক্স-রে মেশিন চালু থাকলেও কোন পথে সেখানে যেতে হবে তার কোনও দিক নির্দেশিকা নেই রোগীদের জন্য। হাসপাতালের এক কর্মী জানালেন, ইন্ডোরের নীচের তলাতেই আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করার রুমের পাশে একটি এক্স-রে করার রুম রয়েছে। সেখানে গিয়েও রুমে তালা ঝুলতে দেখা গেল।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়েই। হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে দুশো রোগী ডিজিটাল এক্স-রে করান। এক আত্মীয়কে চিকিৎসা করাতে আসা ছাতনার বাসিন্দা সুজয় ধর বলেন, “কোথায় এক্স-রে জানতে চাইলেই ডিজিটাল এক্স-রে রুমের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন এক হাসপাতাল কর্মী। সেখানে গিয়ে দেখি মেশিন খারাপ। এ বার কোথায় যাব জানতে চাইলে কর্মীরা বলে দিচ্ছেন মেশিন ঠিক হলে আসবেন। হাসপাতালের আর কোথায় এক্স-রে হয় সে কথা কেউ জানাচ্ছেন না।”
সদ্য জেলা সফরে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাফ নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পরিষেবায় কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করবে না সরকার। অথচ তার পরেও বাঁকুড়া মেডিক্যালে এক্স-রে করাতে গিয়ে রোগীদের নিয়ে এদিক সেদিক হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে আত্মীয়দের? তাঁদের দাবি, মেশিন ঠিক না হওয়া পর্যন্ত কোন পথে হাসপাতালের অন্যান্য এক্স-রে সেন্টারে যেতে হবে, তার দিক নির্দেশিকা করে দিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নবকুমার বর্মন বলেন, “রোগীদের পরিষেবা পেতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ রাখতেই হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy