Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
MS Dhoni

ক্রমে আগ্রহ বাড়ছে কালো মুরগি পালনে

স্থানীয় মুরারই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য খাইরুল গাড়ি ব্যবসা ছেড়ে ছাদের উপর শেড বানিয়ে কালো মুরগি বা কড়কনাথ চাষ করছেন বছর খানেক হল।

খামারে কালো মুরগি। নিজস্ব চিত্র

খামারে কালো মুরগি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ০০:৪৯
Share: Save:

মধ্যপ্রদেশের এক বিশেষ প্রজাতির মুরগি ‘কড়কনাথ’ পালনে আগ্রহী হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এই মুরগির পালক, ঝুঁটি, ঠোঁট, নখ, মাংস, হাড়— সবই কালো। রক্ত লাল হলেও তাতেও কালচে আভা। শুধু ডিমের রং হালকা বাদামি। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই মুরগি পালনে কেবল ধোনি ননল আগ্রহী হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা। সরকারি সহয়তায় এবং ব্যক্তিগত উদ্যেগে বীরভূমেও শুরু হয়েছে কড়কনাথ পালন।

মুরারই ১ ব্লকের ভাদিশ্বরের বাসিন্দা খাইরুল বাশার তেমনই এক জন। স্থানীয় মুরারই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য খাইরুল গাড়ি ব্যবসা ছেড়ে ছাদের উপর শেড বানিয়ে কালো মুরগি বা কড়কনাথ চাষ করছেন বছর খানেক হল। ১০০টি কড়কনাথ দিয়ে শুরু করেছিলেন । বর্তমানে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে১১৮। খাইরুল জানাচ্ছেন, দিন কয়েকের মুরগি আরও বাড়বে। কারণ, ডিম থেকে ছানা ফুটানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

অন্য দিকে নলহাটি ১ ব্লকের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের চত্বরেই খামার গড়ে মাস দুয়েক আগে শুরু হয়েছে ওই প্রজাতির মুরগি চাষ। ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ আধিকারিক লিটন পাল বলেন, ‘‘বছরে ১০০ দিনের কাজ এবং প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের যৌথ উদ্যোগে নদিয়া থেকে ২০০টি কড়কনাথ প্রজাতির মুরগি ছানা আনা হয়েছিল। বর্তমানে ১৯৮টি মুরগি রয়েছে। অচিরেই সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য, লাভজনক এই মুরগি চাষে স্থানীয়দের আগ্রহী করে তোলা’’। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাণিমিত্রদের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ওই খামারের দায়িত্বে রয়েছে। কী ভাবে যত্ন বা দেখভাল করতে হবে, সে বিষয়ের সর্বক্ষণের পরামর্শদাতা হিসাবে রয়েছেন ভেটেনারি অফিসার অনিমেষ চন্দ্র কুণ্ডু।

কেন এই বিশেষ মুরগি চাষে এমন আগ্রহ? এর প্রধান কারণ, এই মুরগির মাংস ও ডিমের দাম আকাশছোঁয়া। এই মুরগিতে ‘অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট’ থাকায় এর পুষ্টিগুণও অন্যান্য মুরগির চেয়ে অনেক গুণ বেশি। স্বাদও অনন্য। পুষ্টিবিদেরা মনে করছেন, মধ্যপ্রদেশের কার্যত জংলি প্রজাতির এই মুরগির মাংস ডায়েটে রাখলে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তাল্পতার মতো অসুখ অনেকটাই দূরে থাকবে।

এক সঙ্গে এত গুণের জন্যই কালো মুরগির কদর বাড়ছে। দিনের পর দিন ব্রয়লার মুরগির মাংস খেয়ে এখন অনেকের অরুচি ধরেছে। দেশি মুরগিও সব সময় মেলে না। সে-সব ছেড়ে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এখন অনেকেই চাইছেন ‘কালি মাসির’ (কড়কনাথকে এ নামেও ডাকা হয়) মাংস খেতে। মাংসের দাম কেজি প্রতি ৬৫০ টাকারও বেশি। ডিমের দাম কমপক্ষে ৩০ টাকা প্রতি পিস।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা তুহিন চক্রবর্তী জানান, দেশীয় প্রজাতি হওয়ায় এই মুরগির মাংসে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। পালনে খরচও বেশি নয়। তাই এই মুরগি পালনে আগ্রহ বাড়ছে জেলায়।

খাইরুল জানাচ্ছেন, কড়কনাথের মাংস বিক্রি করেছেন ৬৫০ টাকা কিলো দরে। চাহিদা যথেষ্টই। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকই চাইছেন এই মুরগি পালন করতে। কিন্তু সচরাচর এই প্রজাতি মেলে না-বলে ডিম বিক্রি করার বদলে তা ফুটিয়ে ছানা করার দিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।’’ নলহাটি ১ ব্লকের খামার গড়ার পিছনেও তেমনই উদ্দেশ্য। লিটন পাল বলেন, ‘‘মুরগিগুলি পরিণত হলেই ডিম ফুটিয়ে এলাকার মানুষকে এই মুরগি পালনে উৎসাহিত করব। কারণ ফার্ম না রেখেও স্বাভাবিক পরিবেশেই এদের বড় করে তোলা যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

MS Dhoni black Hen Chicken
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy