আধার কার্ড সংক্রান্ত কাজের জন্য লাইন। রামপুরহাট শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
কারও শঙ্কা নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে। কারও শঙ্কা আসন্ন লোকসভায় ভোট দেওয়া নিয়ে। তাই ভোরের আলো ফোটার আগেই নতুন আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য রামপুরহাট শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে লাইন দিচ্ছেন অনেকে। অনেকে আবার রাত থেকেই লাইন রাখছেন। কাকভোরে সাইকেল, মোটরবাইক, টোটয় চড়ে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসছেন অনেকে। কোলের বাচ্চা নিয়ে মহিলা থেকে অশীতিপর বয়স্ক— আধারের লাইনে দেখা মিলছে অনেকের।
বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট শহরের পাঁচমাথা মোড় লাগোয়া প্রধান ডাকঘরের গিয়ে দেখা গেল শতাধিক মানুষের জটলা। শহরের প্রধান ডাকঘর ছাড়াও শহরের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে নিয়মিত আধার কার্ড সংক্রান্ত কাজ চলে। তা হলে এই লাইন কেন? প্রশ্নের উত্তরে রামপুরহাট থানার পাখুড়িয়া গ্রামের যুবক মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘সামনে লোকসভা ভোট। সিএএ এসে গিয়েছে। এনআরসি-ও চালু হতে পারে শুনছি। তখন আধার নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাই এই লাইন।’’ লাইনে দাঁড়ানো কয়েক জনের আশঙ্কা, ঠিক মতো তথ্য না দিতে না-পারলে দেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে শুনেছেন। তাই আধার কার্ড তৈরি করাতে এসেছেন।
ভিড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রামপুরহাট থানার রানিনগর গ্রামের আর এক যুবক পথিক মণ্ডল বলেন, ‘‘আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য রামপুরহাট শহরের প্রধান ডাকঘরে তিন-চার মাস অন্তর একটা নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হয়। সেই তারিখের মধ্যে না-আসতে পারলে আবার পিছিয়ে যাবে। তাই নির্দিষ্ট দিনে এসে রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়েছি।’’
শহরের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কেও তো আধার কার্ড তৈরি এবং সংশোধন করা হয় সেখানে কেন যান না? প্রশ্নের উত্তরে লাইনে দাঁড়ানো রামপুরহাট শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমরেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘কোন ব্যাঙ্কে কবে আধার কার্ড তৈরি এবং সংশোধনের দিন দেওয়া হয় সেটা আমরা জানতেই পারে না। প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা শহরের প্রধান ডাকঘরেই আধার কার্ড তৈরি এবং সংশোধন হয় বলে জানে। তাই তাঁরা ডাকঘরের সামনে ভোরের আলো ফোটার আগে জড়ো হন। এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি যদি আরও সক্রিয় হয়, তা হলে এক জায়গায় এত মানুষের ভিড় হয় না।’’
রামপুরহাট শহরের প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার তরুণকুমার সাহা বলেন, ‘‘আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধনের জন্য একটি মাত্র যন্ত্রে কাজ করতে হয়। সেখানে প্রতি দিন ২৫ জনের আধারে নাম তোলা বা সংশোধন করা হয়। তবে সেই অ্যাপয়েন্টমেন্টের টোকেন তোলার লাইনে দাঁড়াচ্ছেন অন্তত ২৫০ জন। লাইনে টোকেন পেতে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লাগলেও যাঁরা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তাঁদের প্রত্যেককেই নির্দিষ্ট দিনের টোকেন দেওয়া হচ্ছে।’’ জানা গিয়েছে, এ দিন যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁদের আধার কার্ড সংক্রান্ত কাজের জন্য ৩০ মে পর্যন্ত টোকেন দেওয়া হয়েছে। শনিবার আবার টোকেন সংগ্রহ করার জন্য দিন দেওয়া হয়েছে। তবে ভিড়ের একাংশ জানালেন, গ্রামের দিকে উপ ডাকঘরে যদি আধার কার্ড তৈরি করা হত তা হলে তাঁদের এই হয়রানি হত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy