গ্রামে চারশ পরিবারের বাস, ভোটার সংখ্যা ৯৫০ কিন্তু শৌচালয় মাত্র ১৫টি। মুরারই ২ ব্লকের এই গ্রামটির নাম উত্তর রামচন্দ্রপুর। গ্রামের এই ছবিটি বাস্তব হলেও মুরারই-২ ব্লক ‘নির্মল বাংলা’র সরকারি শংসাপত্র পেয়েছে। ব্লক জুড়ে প্রচার হয়েছে, এখানে কোনও গ্রামেই আর মাঠে-ঘাটে, খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে যান না কেউ। যদিও এই গ্রামের মতি রবিদাস, কবিরুদ্দিন শেখেদের কাছে শৌচাগার মানে খোলা মাঠ বা নদীর পাড়। মহিলাদেরও লাজ-লজ্জ্বার বালাই না রেখে পুরুষদের মতোই একই ভাবে মাঠে, ঘাটে, খোলা জায়গায় গিয়ে বসতে হয়।
মুরারই-২ ব্লকের পাইকরের উত্তর রামচন্দ্রপুরের এই অবস্থার পিছনে রাস্তাকেই দায়ী করেছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে বাসিন্দা সকলেই। গ্রামে সাকুল্যে তিনটে পাকা বাড়ি। অধিকাংশ মানুষই চাষ নির্ভর। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকার সংখ্যাই বেশি। মাটির বাড়িতে কোনও রকমে দিন যাপন। পঞ্চায়েত, ব্লক অফিস, মহকুমাশাসক, জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে তাঁদের এলাকার সমস্যা নিয়ে দরবার করার কথা ভাবতেও পারেন না।
গ্রামের গৃহবধূ মতি রবিদাস বলেন, ‘‘সরকার থেকে আমাদের গ্রামে কোনও শৌচালয় করা হয়নি। গ্রামের ছেলে মেয়েরা স্কুলে, কলেজে পড়ছে। তাদের অসুবিধা হচ্ছে। গ্রামের বাইরের জগৎটাই যে আলাদা। ওদের কাছেই নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু গরিব বলে একটা শৌচালয় বানানোর টাকা নেই। সরকারি সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়।”
আরেক গ্রামবাসী কবিরুদ্দিন শেখও বলেন, ‘‘গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে শৌচালয় নেই। আমার চাষি, এমনিতেই খুব কষ্ট করে সংসার চলে। শৌচালয় তৈরির টাকা আমরা কোথায় পাব? সব গ্রামে শৌচালয় করে দিলেও সরকার আমাদের কেন শৌচাগার করে দিচ্ছে না সেটা জানা নেই।” মুরারই-২ এর বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, ‘‘উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রামে রাস্তা না থাকায় ওই গ্রামে গাড়ি ঢোকার অসুবিধা আছে। তাই ওখানে শৌচাগার নির্মাণ করা যায়নি। খুব তাড়াতাড়ি ওই গ্রামের সব বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করার
উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy